সর্বশেষ

» শোকাবহ ১৫ আগস্ট : বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অন্ধকার অধ্যায়

প্রকাশিত: ১৫. আগস্ট. ২০২২ | সোমবার

Manual3 Ad Code

ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন: ড. দীনেশচন্দ্র সেন ময়মনসিংহ গীতিকার সংকলক হিসেবে বহুল পরিচিত ও খ্যাতকীর্তি। তার বই বৃহৎ বঙ্গ সেন আমলকে এক অন্ধকার যুগ বলেছে। তিনি বেঁচে থাকলে আরও একটি বই লিখে বলতেন, আরও বড় অন্ধকারের সূচনা ১৫ আগস্ট থেকে, যা ক্রমে ক্রমে ঘণীভূত হয়েছে। বাংলাদেশের অন্ধকার বিস্তৃত হয়েছিল ‘৯০ পর্যন্ত। সময়টি ছিল অবৈধ সামরিক স্বৈরশাসনের। শাসকরা মুক্তিযুদ্ধ-চেতনার বিপরীত স্রোতের সাঁতারু ছিল। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশকে পাকিস্তানের আদলে গড়তে। ২০০১-এ ছিল বিএনপি-জামায়াত শাসন, যখন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ ছিনতাই হয়েছিল; অন্ধকার প্রগাঢ় হয়েছিল। এই হলো, ১৫ আগস্ট পরবর্তী ঘনায়মান অন্ধকারের ইতিবৃত্ত।

১৫ আগস্ট সম্পর্কে আমরা যা জানি, বলি ও লিখি, তা তো যেন অনুমিত এবং দেশি-বিদেশি সূত্র থেকে প্রাপ্ত বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত তথ্যভিত্তিক। কিন্তু যাকে বলে অনুপুঙ্খ এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য আমাদের কাছে নেই। তার মানে আমাদের ইতিহাসের একটি কালো অধ্যায় অজানা-স্বল্প জানার ঘন অন্ধকারে নিমজ্জিত। এ অন্ধকার সরানো যাবে না, যদি না তথ্য-ঘাটতির অভাব মেটানো যায়, যার সার্বিক দায়িত্ব বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের। কারণ বিএনপি, জাতীয় পার্টি বা জামায়াত এই কাজটি করবে না; কারণ তারা তো ১৫ আগস্টের সুবিধাভোগী।উপরন্তু বিএনপি কোনোদিন জিয়া হত্যার বিচার চায়নি; কিন্তু আমরা চাই।

আমরা সব হত্যার তথ্য ও বিচার চাই। আমাদের চাওয়ার তালিকায় সাগর-রুণি বা ত্বকী হত্যাও আছে। আমরা জানি খুন করলে খুনির বিচার হয়, সেটাই আইনের শাসন। খুনির বিচার না করে, দায়মুক্তি অধ্যাদেশ করা এবং ক্ষমতাসীন জিয়াউর রহমান-এর মতো ক্ষমতার মসনদ পোক্ত করার উদ্দেশ্যে খুনিদের পুরস্কৃত করা ছিল জংলি কাজ। ফ্রিডম পার্টিকে রাজনীতি করতে দিয়ে এরশাদও জংলি কাজ করেছিল। জিয়া ও এরশাদের সেনা আইনে মরণোত্তর কোর্ট মার্শাল হবার কথা। কারণ সেনা আইনে কোথাও রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলকে বৈধ বলা হয়নি।

Manual7 Ad Code

 

Manual1 Ad Code

১৫ আগস্টের খুনিদের বিচার করে আমাদের আত্মপ্রসাদ অযৌক্তিক; কারণ তারা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করেছিল মাত্র। ষড়যন্ত্র ও ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও আড়ালে, যদিও আমরা উভয় প্রসঙ্গে অল্পবিস্তর জানি। আড়ালে থেকে গেছে বিদেশি ষড়যন্ত্র ও ষড়যন্ত্রকারীও। ১৫ আগস্ট দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কাজ।

 

দেশি ষড়যন্ত্রের প্রধান কুশীলব ছিল মোশতাক, যার সঙ্গে ছিল তাহের উদ্দীন ঠাকুর ও মাহবুবুল আলম চাষী।সেনাবাহিনিতে ষড়যন্ত্রকারী (চাকরিচ্যুতসহ) ছিল ফারুক-রশিদ-ডালিম গং। এদেরও সেনা আইনে বিচার হবার কথা, যা আজও হয়নি। উপরন্তু সেই সময়ে সেনা প্রশাসনের কেউ দায়িত্ব এড়াতে পারে না। দায়িত্ব এড়াতে পারে না চট্টগ্রাম হালি শহরের ‘আন্ধা হুজুরও’। কারণ এই ব্যক্তি রশিদ ও তার স্ত্রী জুবায়দা রশিদকে বঙ্গবন্ধুকে খুন-সহায়ক (?) কুফরি কালাম শিখিয়েছিল।

Manual1 Ad Code

 

বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে প্রধান ছিল পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ ছিল প্রতিবাদী-প্রতিরোধী রাষ্ট্র, যার নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু। সুতরাং রাষ্ট্র ও তার নেতা উভয়ই এ দুই রাষ্ট্রের চক্ষুশূল ছিল। এ সম্পর্কে আমাদের অনেক তথ্য জানা আছে।

Manual4 Ad Code

 

প্রয়োজন ১৫ আগস্ট সংক্রান্ত আদ্যোপান্ত তদন্তের উদ্দেশে একটি কমিশন গঠন। কমিশনপ্রাপ্ত তথ্যাদি শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশ করতে হবে যাতে জনগণ সবকিছু জানতে পারে। জনগণকে জানাতেই হবে, কারণ সংবিধানের ৭(১) ধারা অনুযায়ী তারাই ‘সকল রাষ্ট্রক্ষমতার মালিক’; সরকার জনগণের হয়ে দায়িত্ব পালনকারী মাত্র।

 

লেখক: চেয়ার অধ্যাপক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চেয়ার, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল্স (বিইউপি)।

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code