সর্বশেষ

» সিলেটে ৮০ শতাংশ এলাকা পানির নিচে, বন্যা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা

প্রকাশিত: ১৭. জুন. ২০২২ | শুক্রবার


Manual6 Ad Code

চেম্বার ডেস্ক:: সিলেট বিভাগের বন্যা দেশের আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। উজান থেকে আসা ঢলে এই বিভাগের ৮০ শতাংশ এলাকা এখন পানির নিচে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ এলাকা ডুবে গেছে। বাকি তিন জেলার শহরের কিছু উঁচু স্থান, পাহাড়ি এলাকা এবং ভবন ছাড়া সবখানে এখন পানি। আগামী দুই দিনে এই পানি আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ফলে এ অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও ভয়াবহ অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের (আইএমডি) বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের চেরাপুঞ্জি বিশ্বের সবচেয়ে বৃষ্টিপ্রবণ এলাকা। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৯৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা জুন মাসে ১২২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আর গত তিন দিনে সেখানে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এটিও গত ২৭ বছরের মধ্যে তিন দিনে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, চেরাপুঞ্জিতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে।

অন্যদিকে দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদী তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দ্রুত বাড়ছে। এরই মধ্যে তিস্তা অববাহিকার চারটি জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ১৯৯৮ সালের জুন মাসে সিলেট বিভাগে অনেকটা এমন বন্যা হয়েছিল। কিন্তু এর পর বেশির ভাগ বন্যা মূলত হাওর ও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। ২০১৯ সালে সুনামগঞ্জ ও সিলেট শহরে দুই তিন দিনের জন্য হঠাৎ বন্যা হয়। কিন্তু পুরো সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত হওয়ার মতো বন্যা হয়নি।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভুইয়া বলেন, দেশের একটি বিভাগের প্রায় ৮০ শতাংশ ডুবে যাওয়ার মতো বন্যা এর আগে বাংলাদেশে হয়নি। সিলেটে এর আগে যত বন্যা হয়েছে, তা মূলত হাওর এলাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এবার গ্রাম, শহর ও উঁচু এলাকাও পানির নিচে চলে গেছে। আর সোমবারের আগে এই পানি নামার সম্ভাবনা কম। কারণ, উজানে আগামী দুই দিন অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে।

এদিকে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। টেলিফোন নেটওয়ার্ক অকার্যকর হয়ে গেছে। অনেক স্থানে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র ও বৈদ্যুতিক খুঁটি তলিয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভয়াবহ বন্যায় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক তলিয়ে গেছে। সারা দেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সিলেট ও সুনামগঞ্জের প্রায় পৌনে দুই লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন রয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

Manual6 Ad Code

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বাসাবাড়ির মিটার পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় নগরের উপশহর এলাকায় এরই মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। দক্ষিণ সুরমা বিদ্যুতের সাবস্টেশনে পানি ওঠায় পুরো দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে।

আরও জানা গেছে, সিলেটের চার জেলায় পিডিবির অধীন প্রায় সাড়ে চার লাখ গ্রাহক আছেন। এর মধ্যে সিলেটের ১ লাখ এবং সুনামগঞ্জের ৯০ হাজার গ্রাহক বর্তমানে বিদ্যুৎহীন আছেন।

Manual6 Ad Code

সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও ২-এর জেনারেল ম্যানেজার দীলিপ চন্দ্র চৌধুরী ও সঞ্জীব কুমার রায় জানান, সমিতির সিলেট-১-এর অধীনে থাকা ৪ লাখ ১৩ হাজার গ্রাহকের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার গ্রাহক এবং সিলেট-২-এর অধীনে থাকা ২ লাখ ১২ হাজার গ্রাহকের মধ্যে অন্তত ৯০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন আছেন।

Manual4 Ad Code

এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের হিসাবে, আজ সকাল থেকে সিলেট বিভাগের সব কটি নদ-নদীর পানি ও উত্তরাঞ্চলে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। দেশের বিভিন্ন নদ–নদীর ১০৬টি পয়েন্টের মধ্যে ৮৬টির পানি বাড়ছে, ২০টির কমছে।

Manual4 Ad Code

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code