সর্বশেষ

প্রত্যেক আইসিইউ রোগীর পেছনে সরকারের ব্যয় গড়ে ৪ লাখ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১২. ডিসেম্বর. ২০২০ | শনিবার

চেম্বার ডেস্ক:: করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যথোপযুক্ত নেতৃত্ব ও হাজারো স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রচেষ্টার মাধ্যমেই দেশের করোনাভাইরাস এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি।

 

তিনি বলেন, ‘কোভিড মোকাবিলার শুরু থেকেই দেশের মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা ফ্রি করে দিয়েছে সরকার। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, কোভিড মোকাবিলায় প্রত্যেক আইসিইউ বেডের রোগীর পেছনে সরকারের গড়ে প্রায় চার লাখ টাকা ও সাধারণ বেডের রোগীর জন্য ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। সময়মত জরুরি ও প্রয়োজনীয় ওষুধের মজুত রাখা হয়েছে। সঠিক সময়ে ডেডিকেটেড হাসপাতাল ও বেড সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে কোভিড টেস্ট সেন্টার একটি থেকে ১২০টি করা হয়েছে। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে দেশের ৫৯টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।’

শনিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হেলথ ইকনোমিক ইউনিট আয়োজিত সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা দিবস-২০২০ উপলক্ষে সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

এসময় তিনি আরও বলেন, ‘টেলিমেডিসিন সেবার মাধ্যমে দেশের আড়াই কোটি মানুষের ফোনকল রিসিভ করে সরকারি সেবা দেয়া হয়েছে। এর ফলে দেশে সংক্রমণ কম হয়েছে। মৃত্যুহার কমে গেছে। দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন রয়েছে। গার্মেন্টস শিল্প-কারখানা খোলা থাকায় দেশের মানুষকে ঘরে বসে থাকতে হয়নি। দেশের স্বাস্থ্যখাত নিরলসভাবে কাজ করছে এবং কোভিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে বলেই এসব সম্ভব হয়েছে।’

 

সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যখাতের বাজেট আরও বৃদ্ধি করতে হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করা, নতুন লোকবল নিয়োগ দেয়ার ওপরও গুরুত্ব দেন মন্ত্রী।

 

শহর অঞ্চলের প্রাইমারি হেলথ কেয়ার স্বাস্থ্যসেবার হাতে না থাকায় পরিসংখ্যানগত দিক থেকে স্বাস্থ্যসেবার মান ভালো হচ্ছে না উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আরবান হেলথ কেয়ার এখনো লোকাল গভর্নমেন্টের অধীনে। লোকাল গভর্নমেন্টের কাছে লোকবলের সেধরনের সক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা কম থাকায় এই খাতের উন্নতি দৃশ্যমান হচ্ছে না।’ এর ফলে সামগ্রিক স্বাস্থ্যসেবার পরিসংখ্যানগত মান ব্যহত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

 

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান বলেন, ‘পরিসংখ্যান অনুযায়ী বছরে ৫০ লাখ মানুষ আউট অব পকেট এক্সপেন্ডিচারের (নিজের পকেট থেকে স্বাস্থ্যসেবায় যে খরচ করা হয়) ফলে দরিদ্র হচ্ছে। এর মধ্যে ৬০ ভাগ মানুষ ভারত, সিংগাপুর, ব্যাংকক গিয়ে চিকিৎসা নিতে দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। কেন মানুষকে চিকিৎসা নিতে বিদেশমুখী হতে হয় সেটি নিয়ে আমাদেরকে ভাবতে হবে ও করণীয় ঠিক করতে হবে।’

 

তিনি দেশের সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থার চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘দেশে ৬১০টি সরকারি হাসপাতাল আছে, ৯০ হাজারেরও বেশি চিকিৎসক রয়েছে, প্রয়োজনে আরও লোকবল বৃদ্ধি করা হবে কিন্তু চিকিৎসা করতে গিয়ে মানুষ যেন দরিদ্র হয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে আরও কাজ করতে হবে। চিকিৎসার জন্য ভালো সেবা নিশ্চিত করা না গেলে মানুষ বিদেশে যাবে এবং চিকিৎসা খরচ মেটাতে গিয়ে দরিদ্র হয়ে যাবে। এটি হতে দেয়া যাবে না।’

 

স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহাদৎ হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেনটেটিভ ডা. ভুপিন্দ্র আওলাখ।

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

October 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031