সর্বশেষ

» পুলিশের এসআই মাজিদুলের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ!

প্রকাশিত: ২৮. অক্টোবর. ২০২৪ | সোমবার

চেম্বার ডেস্ক: ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্ধকোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ পুলিশের এক সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই)র বিরুদ্ধে।

মাজিদুল হক খাঁন পটুয়াখালী জেলার দুমকি চরবয়ড়া এলাকার আব্দুস ছত্তার খাঁনের পুত্র। তিনি ২০১৯ সালে বাংলাদেশ পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) ব্যাচ-৩৭ এর সদস্য, যার বিপি নাম্বার ৯৩২০২২৭১৩৮, ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতার পুলিশের চাকুরীতে যোগদান নিয়ে এলাকায় রয়েছে নানা গুঞ্জন।

সরজমিনে নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মোঃ আফজাল হোসেনের কলকাঠিতেই পুলিশে সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) হিসেবে চাকুরী পেয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা। বাংলাদেশ পুলিশে চাকুরী হওয়ার আগে মাজিদুল পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি (২০১৭/২০১৮) এবং শের-ই বাংলা হল ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রশিক্ষণ শেষে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ থানা, গৌরনদী থানা, উজিরপুর থানা এবং সর্বশেষ ঢাকা বংশাল থানায় বদলি হয়ে কর্মরত রয়েছেন তিনি। সাংগঠনিক পরিচয় বহন করে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন এসআই মাজেদুল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন তার কর্মস্থল বংশাল থানায় হওয়ায় এবং আওয়ামী লীগের দলকানা কর্মী হিসেবে আন্দোলন রত ছাত্রদের উপর নৃশংসতা চালায় এসআই মাজিদুল। চাকুরীতে প্রবেশের আগে ছাত্রলীগের চিহ্নিত ক্যাডার ছিলেন তিনি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এর ছত্রছায়ায় এবং দলীয় পরিচয় বহন করার বদৌলতে এলাকায় বেপরোয়া ও উশৃংখল হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার, ইভটিজিং, দেশীয় অস্ত্রের ব্যবহার, মারামারি সহ বিভিন্ন উশৃংখলতা করার কারনে থানা ও কোর্টে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে সুত্র জানায়।

এদিকে সাংগঠনিক পরিচয় বহন করে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে (এসআই) পদে যোগ দেন বলে বিশস্ত সুত্র নিশ্চিত করে। কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে ঘুষ বাণিজ্য ও ক্ষমতার অপব্যবহার, ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় এলাকায় গিয়ে প্রভাব বিস্তার করতেন বলেও জানা যায়। একাধিক অনিয়মে জড়িত থাকায় দফায় দফায় তাকে বদলীর সম্মুখীন হতে হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তার কর্মস্থল ঢাকার প্রাণ কেন্দ্র বংশাল হওয়ায় এবং আওয়ামী লীগের দলকানাকর্মী হিসেবে আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর অতি উৎসাহী হয়ে অমানবিক, নৃশংসতা তিনি চালিয়েছেন বলে সুত্র জানায়।

বিভিন্ন হল ও বাসা থেকে ছাত্রদের ধরে এনে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার ও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবে যারা টাকা দিতে ব্যর্থ হতো তাদের উপরে নির্মম-নির্যাতন চালাতেন তিনি ও তার গ্রুপ।

সরজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে- পুলিশের (এসআই) মাজিদুল পারিবারিকভাবে অস্বচ্ছল হলেও অবৈধ আয়ের ফলে, মাত্র ছয় বছর চাকুরীর ব্যবধানে গ্রামের বাড়িতে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা খরচ করে সৌখিন গূহ নির্মাণ করেন এবং নিজ জেলা পটুয়াখালী ও বরিশালে প্লট ক্রয় করেছেন বলে জানিয়েছেন তার এলাকার একাধিক বাসিন্দা।

(এসআই) মাজিদুলের এলাকার কিংবা তার পরিচিত কোন ভুক্তভোগী মামলা বা অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে অভিযোগকারী যদি তার বিপক্ষের কেউ হয়, তাহলে তিনি জোর তদবির চালানো ও নিজের পদবি গোপন রেখে সিনিয়র অফিসার পরিচয়ে বিভিন্ন মহলে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগও পাওয়া গেছে।

এসআই মাজেদ এর আপন ভাইয়ের ছেলে “আহম্মেদ রাব্বি” আজিজ আহম্মেদ ডিগ্রি কলেজের ছাত্র, তার নেতৃত্বে ১৮-২০ জনের একটা গ্রুপ বুটোবিশ বাজার, তালতলি বাজার ও দুমকি থানা ব্রীজ এলাকায় ত্রাস করে বেড়ায়। শিক্ষক নির্যাতন, অবৈধ দখলে সম্পৃক্ত হওয়া, ইভটিজিং, মাদক সেবন ও মাদক বিক্রির সাথে সম্পৃক্ত থাকা সহ, শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার অপরাধে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে, এসব অপরাধ লুকাতে মামলার তদন্তে জোর হস্তক্ষেপ ও টাকার জোগান দিয়ে থাকেন এসআই মাজেদুল।

এ প্রসঙ্গে ঢাকার বংশাল থানায় কর্মরত (এসআই) মাজিদুল হক খাঁনের সঙ্গে সরাসরি দেখা করে আলাপকালে তিনি এক সময়ের ছাত্রলীগের কর্মী থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন -পুলিশে চাকুরী নিজ যোগ্যতায় পেয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেনের সুপারিশে নয়। তবে ছাত্রলীগের পরে ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন বলে দাবিও করেন তিনি। মূলত রাজনীতি করা তার উদ্দেশ্যে ছিলো না, রাজনীতির পরিচয় বহন করে নিজের জীবনের চাকা ঘুরানোই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য। এক কথায় তাকে হাইব্রিড নেতা ধরা যায় বলেও দাবি করেন তিনি। আন্দোলনে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।

উল্লেখ্য, এসআই মাজিদুলের সঙ্গে দেখা করে তার বক্তব্য সংগ্রহ শেষে তিনি প্রতিবেদকের হাতে জোরপূর্বক ২ হাজার টাকা ধরিয়ে দেন। এটা কিসের টাকা ? আর কেনই বা তাকে দিলেন? প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি মুচকি হেসে বলেন এটা আপনাকে খুশি হয়ে চা-নাস্তার জন্য দিয়েছি। এক পর্যায়ে প্রতিবেদক টাকাগুলো ফেরত দিতে চাইলে তিনি টাকাগুলো ফেরত না নিয়ে জোরপূর্বক পকেটে ঢুকিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

September 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  

Please continue to proceed