আমাদের খালি চোর বলবেন, এটা ফাইজলামি নাকি: টিআইবিকে মুখ্য সচিব

প্রকাশিত: ১৬. এপ্রিল. ২০২২ | শনিবার


Manual5 Ad Code

চেম্বার ডেস্ক::  ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস বলেছেন, ‘ঈমানের সঙ্গে কাজ করার পরেও ঈমান ধরে টানাটানি করলে বুকের মধ্যে খুব লাগে।’

মুখ্য সচিব বলেন, ‘তারা (টিআইবি) বলছে- কোভিড-১৯ এর প্রতিটি টিকা কেনায় আমাদেরকে ৬৯ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। অথচ এসব টিকা কেনায় এডিবি, বিশ্ব ব্যাংক জড়িত ছিল।’

টিআইবি বাংলাদেশকে ‘চোর’ বলছে অভিযোগ করে কায়কাউস বলেন, ‘অথচ টিআইবিকে অর্থায়ন করছে অস্ট্রেলিয়ান ফার্ম বিপিএইচ। প্রতিষ্ঠানটি পরিবেশের ক্ষতি করার জন্য বার বার জরিমানার সম্মুখীন হয়েছে। আপনারা তাদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন কেন? আমাদের খালি চোর বলবেন, এটা তামাশা পাইছেন নাকি আপনারা? শুধু বাংলাদেশকে চোর বলবেন, এটা কি ফাইজলামি নাকি?’

শনিবার এফবিসিসিআই সম্মেলন কক্ষে ‘এলডিসি পরবর্তীতে রপ্তানির চ্যালেঞ্জ: বেসরকারি খাতের জন্য বিকল্প’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি চলমান মেগা গ্রকল্পগুলোতে দুর্নীতির যে অভিযোগ তুলেছে, সেই প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, ‘ওনারা (সিপিডি) বললেন, আমাদের বৃহৎ বৃহৎ প্রকল্পে দুর্নীতি হচ্ছে। আমাদের কোন প্রকল্প নিজেদের অর্থায়নে হচ্ছে বলেন? মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে জাইকার অর্থায়নে। এর প্রত্যেকটি ট্রানজেকশন হচ্ছে জাইকার মাধ্যমে। তাহলে কি আমাদের দুর্নীতির পার্টনার জাইকা?’

বিদেশি ঋণের প্রকল্পে বিদেশিরাই টাকা খরচ করায় দুর্নীতির সুযোগ নেই দাবি করে আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘মেট্রোরেলসহ র‌্যাপিড ট্রানজিটের আরও অনেকগুলো বড় ধরনের অবকাঠামো প্রকল্পের অর্থায়ন করছে জাইকা। তাহলে কি আপনারা বুঝাতে চাইছেন জাপান আমাদের সঙ্গে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়েছে? আরেকটা সবচেয়ে বড় প্রকল্প রূপপুর (পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র), এটার তো আমরা পয়সাও দেখতেছি না। এই প্রকল্পে যে টাকা নিচ্ছি, ওরাই (রাশিয়া) খরচ করতেছে।’

Manual3 Ad Code

টিআইবি ও সিপিডির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, ‘অথচ আপনারা সবসময় আমাদেরকে দুর্নীতিবাজ বানাই দিচ্ছেন, হোয়াট ইজ দিস? ডোন্ট উই হ্যাভ আওয়ার ওন প্রাইড? উই আর সান অব দিস সয়েল। উই হ্যাভ ডান আওয়ার জব অ্যান্ড উই হ্যাভ মেইক দিস কান্ট্রি, অল অব আস।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা ব্যবসা করতেছেন, আমরা চাকরি করতেছি। সবাই মিলে আমরা এই দেশকে এগিয়ে নেব। আমাদের দেশ এখন পৃথিবীতে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। এটা নিয়ে গর্ব করা উচিৎ।’

Manual5 Ad Code

সরকারি অফিসগুলোতে নিম্ন পর্যায়ে কিছুটা দুর্নীতি থাকলেও উপরের পর্যায়ে দুর্নীতি নেই বলে দাবি করেন আহমদ কায়কাউস। আবেগতাড়িত হয়ে কথা বলায় একপর্যায়ে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘ঈমানের সঙ্গে কাজ করার পরে যদি ঈমান ধরে টানাটানি করেন, তখন কিন্তু বুকের মধ্যে লাগে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো.সিরাজুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শরিফা খান।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। এ সময় তিনি ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে রপ্তানি সহায়ক বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

সেমিনারে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, পিডব্লিউসি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা অংশীদার মামুন রশীদ, এফবিসিসিআইয়ের উপদেষ্টা মঞ্জুর আহমেদ, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মজিবুর রহমান এবং সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন রপ্তানি সহায়ক প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলেন, এলডিসি উত্তরণের ফলে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে রপ্তানি খাত। তাই রপ্তানি সম্প্রসারণে সব খাতকে সমান সুবিধা দেওয়া দরকার। এছাড়াও নবায়নের প্রয়োজনীয়তা ছাড়া স্থায়ী নিবন্ধন এবং কেবলমাত্র জমি,পরিবেশ, ইমারত, আগুন ও কর সনদের মাধ্যমে শিল্প স্থাপনের সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। একইসঙ্গে বিডার সব ধরনের ওয়ানস্টপ সেবা চালু, রপ্তানি সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বাস্তায়নে ইপিবি, এনবিআর ও অন্যান্য প্রশাসনিক সিঙ্গেল উইন্ডো ব্যবস্থা কার্যকর করার দাবি জানান।

Manual5 Ad Code

জসিম উদ্দিন করমুক্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, প্রয়োজনীয় গ্যাসসহ পর্যাপ্ত জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

Manual3 Ad Code

ব্যবসায়ী নেতাদের এসব বক্তব্যের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্যকে ব্র্যান্ডিং করেন। প্রত্যেক বিদেশ সফরে তিনি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে যান। এলডিসি উত্তরণের আগের চার বছর মোটেও কম সময় নয় উল্লেখ করে মুখ্য সচিব বলেন, বাংলাদেশ যে গতিতে এগোচ্ছে, তাতে এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন সংস্থার করা হিসাব পরিবর্তন করে দেবে।

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code