সর্বশেষ

» অনুমতি মিললে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে আজই বিদেশ নেওয়া হতে পারে

প্রকাশিত: ০৬. মে. ২০২১ | বৃহস্পতিবার


Manual6 Ad Code

চেম্বার ডেস্ক:: করোনা আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আবেদন করেছেন তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার। আবেদনপত্রটি পর্যালোচনার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

অনুমতি মিললে আজকের মধ্যেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশ নেওয়া হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, সরকারের আনুষ্ঠানিক অনুমতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশে লন্ডন রওনা করবেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

বিএনপি চেয়ারপারসন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বৃহস্পতিবার যেকোনো সময় তাকে চার্টার্ড বিমানে করে সিঙ্গাপুর হয়ে লন্ডন নেওয়া হবে। সঙ্গে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদল এবং পরিবারের সদস্যরাও থাকবেন।

তবে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান এ বিষয়ে নিশ্চিত করে এখনও কিছু জানাতে পারেননি।

এর আগে বুধবার রাতে খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিয়ে যেতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার।

রাত সাড়ে ৮টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমণ্ডির বাসায় আবেদনটি নিয়ে যান তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রাত সাড়ে ৮টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ভাই একটি আবেদন দিয়েছেন। সেটা আমি গ্রহণ করেছি। আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। তারা বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমাদের যে নির্দেশনা দেবে সে অনুযায়ী আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।

তিনি আরও বলেন, তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার প্রয়োজন হলে বিষয়টি আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখব। এদিকে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, লিখিত আবেদনটি পাওয়ার পরপরই মতামতের জন্য রাতেই তা আইন সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে।

গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চিকিৎসা শুরু হয়। করোনা আক্রান্তের ১৪ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর খালেদা জিয়ার করোনা টেস্ট করা হলে ফলাফল আবারও পজিটিভ আসে। এরপর কিছু পরীক্ষার জন্য তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রথম দফায় পরীক্ষা করে বাসায় ফেরার পর দ্বিতীয় দফায় ২৭ এপ্রিল তাকে ফের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সোমবার ভোরের দিকে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন।

Manual6 Ad Code

এদিকে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের করোনার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তার ফুসফুস থেকে তরল জাতীয় পদার্থ (ফ্লুইড) অপসারণ করা হয়েছে। তার ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। এর মাত্রা ওঠানামা করছে। এছাড়া অক্সিজেনের মাত্রাও কিছুটা কমেছে।

Manual4 Ad Code

এমন পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার জোর আলোচনা শুরু হয়। খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে টেলিফোনে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার বিষয়ে আলাপ করেন।

এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড সর্বশেষ বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় অবস্থা পর্যালোচনা করে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সুপারিশ করেন। সন্ধ্যায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে দলের চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হন।

একটি সূত্র জানায়, বিদেশ নেওয়ার অনুমতি পেতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করেন খালেদা জিয়ার পরিবার। সরকারের সবুজ সংকেত পাওয়ার পর বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন জমা দেন।

সরকারের নির্বাহী আদেশে গত বছর ২৫ মার্চ মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর তার মুক্তির মেয়াদ দুই দফা বাড়ানো হয়েছে। যে নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছিল সরকার তাতে শর্ত ছিল তিনি বিদেশে যেতে বা বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারবেন না। এখন তাকে বিদেশ যেতে হলে সরকারের নির্বাহী আদেশের শর্ত শিথিল করতে হবে।

Manual3 Ad Code

এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সরকার সেই শর্তটি শিথিল করলে খালেদা জিয়ার বিদেশে যেতে আইনগত কোনো বাধা থাকে না। এটা নির্ভর করছে একেবারেই সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

এর আগে গত বছর মার্চে বিদেশে চিকিৎসার জন্য মুক্তি চেয়ে স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছিল খালেদা জিয়ার পরিবার।

Manual1 Ad Code

এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সবশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে তার এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগান্তরকে বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠা কম বয়সিদের ক্ষেত্রে এই জটিলতাগুলো তেমন কিছু নয়। যেহেতু খালেদা জিয়ার বয়স ৭৬, তাই জটিলতাগুলো দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করছেন তারা। কিছু নতুন ওষুধও দেওয়া হচ্ছে। বিএনপির চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে পরিবার ও দলকে জানানো হয়েছে। আপাতত হাসপাতালে রেখেই তাকে চিকিৎসা দেওয়া হবে। খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য তাকে এনজিওপ্লাস্টি করার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ওই চিকিৎসক আরও বলেন, এখন পর্যন্ত শারীরিক যে অবস্থা, তাতে আমরা আশা করছি, তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সেরে ওঠার পর এ ধরনের কিছু জটিলতায় ভোগেন। তবে খালেদা জিয়ার বয়স হয়েছে। এ কারণে চিকিৎসকেরা বিষয়টি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। ফুসফুস থেকে যে তিন ব্যাগ ফ্লুইড বের করা হয়েছে, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে অন্য কোনো রোগের জীবাণু পাওয়া যায়নি।

বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাবের এক নেতা জানান, অক্সিজেন দেওয়ার পাশাপাশি স্বাভাবিকভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারছেন খালেদা জিয়া। তবে সে ক্ষেত্রে অক্সিজেনের মাত্রা কখনো ৯০ বা তার নিচে নেমে যায়। অক্সিজেন দিলে এর মাত্রা ৯৯ পর্যন্ত থাকে। দিনে তাকে দুই থেকে চার লিটার পর্যন্ত অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। কয়েক দিন যদি এটি অব্যাহত থাকে, সে ক্ষেত্রে অল্প কয়েক দিনের মধ্যে শ্বাসকষ্ট থাকবে না বলেই তারা আশা করছেন। এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বুধবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। তার আশু রোগমুক্তির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চান তিনি।

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code