সর্বশেষ

» মৌলবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম: চলমান রাখা চাই || মোঃ কামরান উদ্দিন

প্রকাশিত: ১২. অক্টোবর. ২০২৪ | শনিবার

মোঃ কামরান উদ্দিন: ভারত উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি শুরু হয় ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসকদের ইন্ধনে। তাদের শাসন-শোষণ টিকিয়ে রাখার জন্যই তারা সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দেয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ভারত উপমহাদেশের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রনের অধিকারের আন্দোলনকে বিভক্ত করা ও তাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা। বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ এক সময় ভারত উপমহাদেশ থেকে হাত গুটিয়ে চলে গেলেও তার সৃষ্ট সাম্প্রদায়িক রাজনীতি এক ভয়ংকর মরণব্যাধি হিসেবে এখনো উপস্থিত।

বাংলাদেশে মৌলবাদী ও উগ্রপন্থীদের প্রভাব সবসময়ই বেশি ছিল। ড.মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর মৌলবাদীদের তান্ডব সাংঘাতিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মৌলবাদীদের এই উত্থান বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিবেকবান,অসাম্প্রদায়িক মুক্তমনের মানুষদেরকে দারুণ ভাবে ভাবিয়ে তুলেছে। বিশেষ করে বামপন্থী রাজনীতিতে বিশ্বাসী মানুষরা উদ্বিগ্ন।

 

আমরা জানি-বামপন্থী দলগুলো,বিশেষ করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জন্মলগ্ন থেকেই সাম্প্রদায়িক রাজনীতি,ধর্ম-ব্যবসায়ী, উগ্র জঙ্গীবাদীদেরকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করে আসছে। বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ মদদে সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী শক্তি বাংলাদেশে তাদের শক্তি সামর্থ বৃদ্ধি করার সুযোগ পেয়েছে।

সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের স্বার্থলিপ্সায় ধর্মকে ব্যবহার করে থাকে। তারা ভাষা আন্দোলনের বিরোধীতা করেছে। ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্টের বিরুদ্ধে তারা লড়েছে। এসবই তারা করেছে ‘ইসলাম রক্ষার’ মিথ্যা দূরভিসন্ধিমূলক অজুহাত তুলে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামী সহ সম্প্রদায়িক মৌলবাদী রাজনৈতিক দলগুলো মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছিল।

জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির (৭১-এর আগ পর্যন্ত ইসলামী ছাত্র সংঘ) তথাকথিত ইসলামী বিপ্লবের কথা বলে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীকে একের পর এক হত্যা করছে। তারা মধ্যযুগীয় বর্বরতার মাধ্যমে এ পর্যন্ত ছাত্র ইউনিয়নের অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। ওরা ধর্মের নামে বহু প্রগতিশীল ছাত্রের জীবনকে অকালে কেড়ে নিয়েছে।

বর্তমানে আমরা লক্ষ্য করছি,সমাজ ও রাষ্ট্রে এসব মৌলবাদীদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়ছে। প্রশ্ন হচ্ছে এসকল ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক শক্তিকে কিভাবে চিরতরে প্রতিহত করা যায়।

আমি মনে করি, দেশপ্রেমিক প্রগতিশীল বাম শক্তির রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়ে মৌলবাদ নির্মূল করা সম্ভব। এ লক্ষ্যে ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধভাবে আপোষহীন সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। কোনো চাপ বা প্রলোভনে মৌলবাদী গোষ্টির সাথে আপোষ করা যাবে না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস,বাংলাদেশ ছাত্র-ইউনিয়ন নিরলস ভাবে সাম্প্রদায়িকতা নির্মূলে কাজ করে যাবে।

লেখকঃ সাবেক ছাত্র-ইউনিয়ন নেতা।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

September 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  

Please continue to proceed