সর্বশেষ

» ভারতে নিয়ে কানাইঘাটের যুবককে হত্যার চেষ্টা: থানায় জিডি

প্রকাশিত: ২৭. জানুয়ারি. ২০২২ | বৃহস্পতিবার

কানাইঘাট প্রতিনিধি: কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির কালিনগর গ্রামে মামলার জের ধরে এক যুবককে গত ২২ জানুয়ারি সীমান্ত এলাকা দিয়ে জোর পূর্বক ভাবে ভারতে নিয়ে গিয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় এলাকায় তুলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় কানাইঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগে জানা যায়, কালিনগর গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলীর পুত্র দরিদ্র দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রফিক আহমদ (২৬), তার মামার দায়েরকৃত একটি মামলার সাক্ষী ছিলেন। সাক্ষী হওয়ার অপরাধে প্রায়ই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রফিককে একই গ্রামের মৃত মাহমুদ আলীর পুত্র মাহমুদ হোসেন (৫৫) তার পুত্র সাহাব উদ্দিন, মৃত জমির আলীর পুত্র আব্দুল কুদ্দুছ ও আব্দুস শুক্কুর নানা ভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। এর জের ধরে বছর খানিক পূর্বে স্থানীয় সুরইঘাট বাজার থেকে বাড়ীর ফেরার পথে রাত ৯টার দিকে বসত বাড়ীতে পৌঁছা মাত্র মাহমুদ হোসেন ও তার পুত্র সাহাব উদ্দিন রফিক আহমদের ভাল বাম চোখে এসিড জাতীয় পদার্থ নিক্ষেপ করলে তার বাম চোখ অনেকটা দৃষ্টি শক্তি নষ্ট হয়ে যায়। তখন রফিক আহমদ বাদী হয়ে চোখে পদার্থ নিক্ষেপকারী বাপ ও ছেলেকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। যা কানাইঘাট থানার মামলা নং-২১, তারিখ-২৭/১/২১ইং।

এ মামলার আসামী বাপ ও ছেলে মামলা তোলে নেওয়ার জন্য রফিক আহমদ ও তার মা হালিমা বেগমকে নানা ভাবে প্রাননাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। গত ২২ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রফিক আহমদ তার ফুফাতো ভাই নাদির আহমদকে সাথে নিয়ে সীমান্তবর্তী আলুবাড়ী এলাকায় অবস্থিত তার রেমা বাগানে পাহারা দেওয়ার জন্য যায়। এ সময় সাহাব উদ্দিন ও তার সঙ্গী আব্দুল কুদ্দুছ, আব্দুস শুক্কুর পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে রফিককে হত্যা করার উদ্দেশ্যে জোর পূর্বক ভাবে টানা হেচড়া করে ভারতের অভ্যন্তরে একটি খাসিয়া পুঞ্জির দিকে নিয়ে যায়। তাৎক্ষনিক তার ফুফাতো ভাই নাদির আহমদ ঘটনাটি রফিক আহমদের পরিবারকে অবহিত করলে তার মা হালিমা বেগম বিষয়টি থানা পুলিশ ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জানান।

পুলিশ ও মুরব্বীয়ানরা আব্দুল কুদ্দুছ এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে রফিক আহমদকে তারা ভারতে নিয়ে গেছে এবং সাহাব উদ্দিনের কাছে রয়েছে বলে জানায়। ঘটনার পরদিন ২৩ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় ভারতীয় খাসিয়াদের মাধ্যমে আহত অবস্থায় রফিক আহমদকে তাদের স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। উদ্ধারের পর আহত অবস্থায় রফিক আহমকে প্রথমে উপজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পর তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফুলা ছেছা জখম সহ শরীর ফুলে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। সেখানে সে ৪ দিন চিকিৎসাধীন ছিল।

দরিদ্র রফিক আহমদের বিধবা মা হালিমা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, তার একমাত্র পরিবারের উপার্জনকারী হচ্ছে তার ছেলে। সে একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। মামার একটি মামলার সাক্ষী হওয়ার কারনে পূর্বে তার ছেলের উপর হামলা করে বাম চোখও অনেকটা নষ্ট করে দিয়েছে সাহাব উদ্দিন গংরা। মামলা করার পরও আসামীদের পুলিশ গ্রেফতার না করার কারনে তারা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করে পুনরায় আমার ছেলেকে খুন করার জন্য এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার ছেলের শারীরিক অবস্থা ভাল নয়।

তার শরীরর ফুলে গেছে নড়াচড়া করতে পারছে না। আসামীদের যেন দ্রত গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় গত বুধবার বাদী হয়ে আহত রফিক আহমদ তাকে ভারতে তুলে নিয়ে খুন করার চেষ্টা সহ উল্লেখিত নানা অভিযোগ এনে সাহাব উদ্দিন ও তার পিতা মাহমুদ হোসেন, আব্দুল কুদ্দুছ ও তার ভাই আব্দুস শুক্কুর কে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ দায়েরের পর থেকে আসামীরা তাদেরকে নানা ভাবে প্রাননাশের হুমকি দিচ্ছে বলে হালিমা বেগম জানান।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

July 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031