» কানাইঘাটে ৫০ উর্ধ্ব মহিলার যৌন হেনেস্থার ভিডিও যে ভাবে ধারণ করে বখাটেরা

প্রকাশিত: ১৪. সেপ্টেম্বর. ২০২১ | মঙ্গলবার

থানায় মামলা দায়ের,আসামীদের আটক করতে চলছে পুলিশের অভিযান
কানাইঘাট প্রতিনিধি: সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ঝিংগাবাড়ী ইউনিয়নের আগতালুক গ্রামের ৫০ উর্ধ্ব ৬ সন্তানের মহিলার যৌন হেনস্থার ভিভিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার পর ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে ভিডিও ধারণ কারী সহ ৪ জনকে আসামী করে কানাইঘাট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তাজুল ইসলাম ও ওসি (তদন্ত) জাহিদুল হকের নেতৃত্বে মামলার আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ এলাকায় গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার দিনভর এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চিরুনি অভিযান শুরু করেছে। তবে ঘটনার সাথে জড়িত কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, যৌন হেনস্থার শিকার এই নারী গত সোমবার থানায় একই গ্রামের লম্পট বররকত উল্লার পুত্র বড় আব্দুল্লাহ (৩৫), একই বাড়ীর সম্পর্কে নাতি সিরাজ উদ্দিনের পুত্র জব্বার (২২), নুর উদ্দিনের পুত্র আব্দুল্লাহ (২৫), রফিক আহমদের পুত্র সায়েদ উল্লাহ (৩০) কে আসামি করে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অভিযোগটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৪) (খ) তৎসহ ও পর্ণোগ্রাফি আইনে রেকর্ড করে। কানাইঘাট থানার মামলা নং ১৩, তাং ১৩/০৯/২০২১ ইং। আজ মঙ্গলবার আসামীদের ধরতে আগতালুক সহ আশপাশ এলাকায় দিনভর থানার ওসি তাজুল ইসলাম পিপিএম এর নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি বাড়ীতে অভিযান চালানো হয়। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, যৌন নির্যাতন ও হেনেস্থা করে ৬ সন্তানের জননী ৫০ উর্ধ্ব এই মহিলার আপত্তিকর ভিডিও ভয়ভীতি দেখিয়ে গত ২৩ আগষ্ট রাতে মহিলার পাকা ঘরের বারান্দার গ্রীলের ভিতরে ধারণ করে সম্পর্কে মহিলার নাতি একই বাড়ীর আব্দুল্লাহ। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করে একই বাড়ীর জব্বার। স্থানীয়রা জানান, গোষ্ঠি প্রথার দ্বন্দের জের ধরে গ্রামের এক পক্ষের সাবেক ইউপি সদস্য হারুন রশিদ ও অপর পক্ষ মাওলানা জসিম উদ্দিন গোষ্ঠির মধ্যে পাল্টাপাল্টি মামলা চলছে। মামলার আসামী হয়ে গ্রামের হারুন রশীদ গোষ্ঠির বরকত উল্লাহর পুত্র বড় আব্দুল্লাহ ঐ মহিলার বসত ঘরে বিভিন্ন সময় রাত্রিপন করত। জমিজমা নিয়ে মহিলার পরিবারের সাথে একই বাড়ির সিরাজ উদ্দিনের পুত্র জব্বারদের বিরোধ চলে আসছিল। গত ২৩ আগস্ট রাতে মহিলার স্বামীর সম্পর্কে ভাতিজা বড় আব্দুল্লাহ তার ঘরে রাত্রিযাপন করতে গেলে এই সুযোগে জব্বার ও ছোট আব্দুল্লাহ মহিলার ঘরের দরজায় তালা মেরে রাখে। একপর্যায়ে তারা এই মহিলাসহ বড় আব্দুল্লাহকে বলে তোমাদের আপত্তিকর ভিডিও আমরা ধারণ করেছি, ৩০ হাজার টাকা না দিলে ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দিব। একর্পযায়ে বড় আব্দুল্লাহকে তারা রাজি করে বলে তুমি মহিলার গায়ে জড়িয়ে ধরো আমরা ভিডিও করবো মোটা অংকের টাকা পাবো সেই টাকা ৩ জন ভাগ করে নেবো। বড় আব্দুল্লাহ তাদের কথামতো ৫০ উর্ধ্ব এ মহিলার বহু আকুতি মিনতির পরও একপ্রকার বিবস্ত্র করে যৌন হেনেস্থা করলে সেটিও ছোট আব্দুল্লাহ ও জব্বার ধারণ করে। সামাজিক লাজলজ্জার ভয়ে ঘটনার দিন মহিলা তাদেরকে ২০ হাজার টাকা দেন ভিডিও না প্রকাশ করার জন্য। এরপর তারা মহিলার কাছে মোটা অংকের টাকা চায়। টাকা না দিলে ধারণকৃত ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দিবে বলে হুমকি দেয় তারা। তাদের সাথে পরে যুক্ত হয়ে সায়দুল্লাহ শালিস বসিয়ে তারা মহিলাকে তাদের দাবীকৃত মোটা অংকের টাকা দেওয়ার জন্য নানা ভাবে হুমকি দিতে থাকে। একপর্যায়ে টাকা না পেয়ে ছোট আব্দুল্লাহ তার মোবাইলে ধারণকৃত এ মহিলার আপত্তিকর যৌন হেনেস্থার ভিডিওটি গ্রামের অপর গোষ্ঠির একজনের কাছে ২৫ হাজার টাকায় বিনিময়ে আদান প্রদান করে। মহিলাকে হেনেস্থাকারীরা হারুন রশীদ গোষ্ঠির লোক হওয়ায় মহিলাসহ ভিডিও ধারণকারীদের সামাজিক ভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য গত রবিবার প্রথমে কয়কেটি ফেইক আইডি থেকে ভিডিওটি আপলোড করা হয়। পরে অনেকে ঘটনার বিচার চেয়ে প্রতিবাদী পোস্ট দিতে শুরু করলে ভিডিওটি ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ে। এতে এলাকা সহ সোশাল মিডিয়ায় বিরোপ প্রতিক্রিয়ার দেখা দেয়। ভিডিওটি থানা পুলিশের নজরে আসলে তাৎক্ষণিক ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক করতে থানার ওসি তাজুল ইসলাম পুলিশকে নির্দেশ দেন। মামলায় ৫০ উর্ধ্ব এ মহিলা বড় আব্দুল্লাহ র্কতৃক যৌন হেনেস্থার পর ধর্ষণের চেষ্টা ও ছোট আব্দুল্লাহ,জব্বার যৌন হেনেস্থার ভিডিও ধারণ করে তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবী করলে তিনি লোক লজ্জার ভয়ে ২০ হাজার টাকা প্রদানের পরও আরও ৫০ হাজার টাকা দাবী করলে টাকা না দেওয়ার কারণে তারা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছে এমন অভিযোগ এনেছেন বলে থানার ওসি তাজুল ইসলাম পিপিএম জানিয়েছেন। মামলার আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান। মহিলার আত্মীয় স্বজন ও স্বামীর বাড়ির লোকজন এ জঘন্য ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

October 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031