সর্বশেষ

» ফ্ল্যাটটিতে আত্মগোপনে ছিলেন আশিষ, ছিল এসবি পাসও

প্রকাশিত: ০৬. এপ্রিল. ২০২২ | বুধবার


Manual5 Ad Code

চেম্বার ডেস্ক:: দীর্ঘ ২৪ বছর আগে চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার পলাতক ও চার্জশিটভুক্ত এক নম্বর আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

 

গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর আশিষ মিরপুরের বাসা ছেড়ে গুলশানের ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন। গ্রেফতারের ভয়ে বাসাটিতে গত ৩০ মার্চ থেকে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।

মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) রাতে রাজধানী গুলশানের ২৫/বি ফিরোজা গার্ডেন নামের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার প্রধান আসামি আশিষকে গ্রেফতার করা হয়।

 

গ্রেফতারের পর রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, গত ২৮ মার্চ নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর আশিষ চৌধুরী মিরপুর ডিওএইচএসের বাসা ছেড়ে গুলশানের ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন। ৩০ মার্চ থেকে এই বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।

 

গোপন তথ্যে এই বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়ে। এই বাসাটি তিনি আত্মগোপনের জন্য ব্যবহার করছিলেন। তার বাসা থেকে ২৩ বোতল মদ, কয়েক বোতল বিয়ার ও সিসার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, তার বাসায় আমরা দুজন নারীকে পেয়েছি। তার পরিবার এখানে থাকেন না। দুজন নারীর পরিচয় ও কী উদ্দেশ্যে ছিলেন, তা জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে। আশিষ রায় একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যায় তার সম্পৃক্ততা ও অন্যান্য বিষয়ে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে বুধবার (৬ এপ্রিল) বিস্তারিত জানানো যাবে।

 

র‍্যাব সূত্রে জানা যায়, ফ্ল্যাটটি আশিষ ভাড়া নেননি। তিনি গত ৩০ মার্চ থেকে ফ্ল্যাটটিতে আত্মগোপনে ছিলেন। ফ্ল্যাটটি অন্য আরেকজনের ভাড়া নেওয়া। ওই ব্যক্তি বিভিন্ন সময় আশিষের মতো অভিজাত অপরাধীদের এ ফ্ল্যাট ভাড়া দিতেন। এসব অপরাধীরা আত্মগোপনের জন্য ফ্ল্যাটটি ব্যবহার করতেন।

 

Manual7 Ad Code

নাম প্রকাশ না করার শর্তে র‍্যাবের এক কর্মকর্তা জানান, অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তি বাড়ির মালিকের কাছ থেকে বেশি টাকায় ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন। ওই ব্যক্তি নিজেও ফ্ল্যাটটি ব্যবহার করতেন না। তিনি অভিজাত অপরাধীদের ফ্ল্যাটটি ভাড়া দিতেন। তাদের কাছ থেকে নিতেন অস্বাভাবিক ভাড়া। এসব অপরাধী অনৈতিক কাজ ও নিজেদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে থেকে বাঁচাতে ফ্ল্যাটটিতে আত্মগোপনে থাকতেন।

তিনি আরও জানান, গত ৩০ মার্চ থেকে যে আশিষ এ ফ্ল্যাটে রয়েছেন তা বাড়ির মালিক জানতেন না। তিনি জানতেন ফ্ল্যাটটি যিনি ভাড়া নিয়েছেন তিনিই রয়েছেন। আশিষ গত ৩০ মার্চ ফ্ল্যাটটিতে উঠেন আত্মগোপনের জন্য।

 

ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে অপরাধীদের পুনরায় বেশি টাকায় ভাড়া দেওয়া ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে। তাকে শনাক্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও র‍্যাব সূত্রে জানা গেছে।

 

২৪ বছর ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন সবার চোখের সামনে দিয়ে। রিজেন্ট এয়ারওয়েজের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) হিসেবে বিমানবন্দরের ভেতরে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। ছিল বিমানবন্দরে প্রবেশের ডিউটি পাস। এই পাসটি সংগ্রহ করার আগে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) কর্মকর্তারা সশরীরে তদন্ত করেন। তাদের সবার চোখ এড়িয়ে পাস নিয়ে এতদিন মন্ত্রী-এমপিসহ ভিআইপিদের সান্নিধ্যে ছিলেন আশিষ।

Manual1 Ad Code

নিয়মিত বিমানবন্দরে যেতেন। বিমানবন্দর ও বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নানা অনুষ্ঠানে ছিল অবাধ যাতায়াত। বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী, বেবিচক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমানসহ সব ভিআইপিদের সঙ্গে ছবি আছে তার।

 

২৪ বছর ধরে কীভাবে তিনি নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়িয়েছেন, কীভাবেই এসবি ক্লিয়ারেন্সসহ বিমানবন্দরের ডিউটি পাস পেয়েছেন এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

 

এছাড়া দুই রকম নামে বাংলাদেশ ও কানাডার আলাদা দুটি পাসপোর্ট ছিল আশিষের।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীতে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন। সোহেল চৌধুরী নিহত হওয়ার পরপরই এই হত্যাকাণ্ডে চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে।

 

Manual6 Ad Code

মামলায় অভিযোগ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর কথা-কাটাকাটি হয়। এর প্রতিশোধ নিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়।

 

ঘটনার রাতে সোহেল তার বন্ধুদের নিয়ে ট্রাম্পস ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় ভেতরে ঢুকতে তাকে বাধা দেওয়া হয়। রাত আড়াইটার দিকে আবারও তিনি ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন সোহেলকে লক্ষ্য করে ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক ও আদনান গুলি চালান। আসামিদের মধ্যে আদনান খুনের পরপরই ধরা পড়েছিলেন।

 

আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ নয়জনের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

 

Manual2 Ad Code

১৯৮৪ সালে এফডিসির নতুন মুখের সন্ধানে নামের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন সোহেল চৌধুরী। ওই একই প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন তার স্ত্রী দিতিও।

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code