করোনা মহামারী মোকাবেলায় ৩ ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ০৪. ডিসেম্বর. ২০২০ | শুক্রবার


Manual6 Ad Code

চেম্বার ডেস্ক:: কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় মানসম্মত ভ্যাকসিনের সার্বজনীন ও ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত, স্থানীয়ভাবে টিকা উৎপাদনে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং মহামারী পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ তিনটি অগ্রাধিকার ক্ষেত্রে জরুরি মনোযোগ এবং আরও বৈশ্বিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কোভিড-১৯ মহামারীর প্রেক্ষাপটে ইউএনজিএর ৩১তম বিশেষ অধিবেশনে ধারণকৃত ভাষণে তিনি বলেন, ‘তবু কিছু অগ্রাধিকার ক্ষেত্রে জরুরি মনোযোগ এবং আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। প্রথমত আমাদের যথাসময়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ও সাশ্রয়ী মূল্যে সবার জন্য মানসম্মত ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

Manual8 Ad Code

জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) বর্তমান চেয়ার আজারবাইজান এবং জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল ৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া দুদিনের এ বিশেষ অধিবেশন ডেকেছেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ২০৩০ সালের উন্নয়ন এজেন্ডা সমতার নীতি মাধ্যমে পরিচালিত এসডিজি অর্জনে সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজের মৌলিক ভূমিকার স্বীকৃতি দেয়।

তিনি বলেন, একইভাবে যখন ভ্যাকসিন প্রাপ্তির কথা আসে, তখন কাউকে পেছনে রাখা সমীচীন হবে না। এটি মহামারী পরাস্ত করতে, জীবন বাঁচাতে এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করতে আমাদের সহায়তা করবে।

দ্বিতীয়ত, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে গোটা বিশ্বের জন্য একটি ‘বৈশ্বিক জনপণ্য বিবেচনা করতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডব্লিবউএইচওর অ্যাক্ট এবং কোভাক্স সুবিধার উদ্যোগ এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘উন্নত দেশগুলোর ট্রিপস চুক্তির আওতায় আইপি রাইটস ওয়েভার ব্যবহার করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্থানীয়ভাবে ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশের সক্ষমতা রয়েছে এবং সুযোগ পেলে ভ্যাকসিন তৈরি করতে প্রস্তুত রয়েছে।

Manual8 Ad Code

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তৃতীয়ত কোভিড ১৯-এর পরিপ্রেক্ষিতে আর্থিক সহায়তাসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেগুলোকে বিশেষভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। জাতীয় সরকারসমূহের পাশাপাশি জাতিসংঘ, আইএফআই, সুশীল সমাজকে তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং কোভিড-১৯ মোকাবেলায় একে অপরের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, সারা বিশ্ব এখনও এই মারাত্মক ভাইরাস এবং এর প্রভাব মোকাবেলায় এক কঠিন সময় পার করছে। এ প্রেক্ষাপটে এ অধিবেশন সর্বোচ্চ গুরুত্ব বহন করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বত্র নিয়ন্ত্রণে না আনলে কোভিড ১৯-কে কখনই কোনো একটি স্থানে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। আসুন আমরা একটি টেকসই বিশ্বের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা সম্পাদনে নতুনভাবে প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করি যেখানে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ভবিষ্যতের মহামারী মোকাবেলায় সমর্থ হবে।

এই অধিবেশন কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় যৌথ পদক্ষেপ, বৈশ্বিক সংহতি এবং বহুপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি আশ্বাস দেন যে বাংলাদেশ এ বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় সবার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে।

বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ১.৪ মিলিয়নেরও বেশি লোক করোনায় মারা গেছে এবং প্রতিদিন শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ মহামারী অনেক মানুষকে আরও দরিদ্র করে তুলেছে এবং আরও অনেকে ক্রমে দারিদ্র্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সব দেশে অপুষ্টি, বৈষম্য ও ক্রমবর্ধমান অসমতা চেপে বসছে এবং শিক্ষাব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। এর ফলে ব্যবসা, বাণিজ্য ও পর্যটনে প্রবল ধস নামায় মানুষের জীবন-জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ মহামারী আমাদের মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস গ্রহণের এবং তা আরও উন্নত করতে এ সংকট থেকে শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যক্রমে, কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই এখনও শেষ হয়নি। অনেক দেশই দ্বিতীয় বা তৃতীয় ধাক্কার মুখোমুখি হচ্ছে।

Manual8 Ad Code

বাংলাদেশ এ মহামারীর কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ আমাদের অর্থনীতি, আমাদের জীবন ও জীবিকা, আমাদের অভিবাসী জনগোষ্ঠিকে ব্যাপক প্রভাবিত করেছে এবং আমাদের কষ্টার্জিত উন্নয়ন সাফল্যকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।

‘তবে আমরা শুরু থেকেই এবং কার্যকরভাবে হস্তক্ষেপ করেছি এবং আমাদের অর্থনীতি ও জনগণকে মহামারী থেকে রক্ষায় সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছি। আমার সরকার আমাদের ব্যবসায়, কর্মসংস্থান ও উৎপাদনশীলতার ওপর প্রভাব হ্রাস করতে ১৪.১৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, যা আমাদের জিডিপির ৪.৩ শতাংশের সমান।

Manual5 Ad Code

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা মার্চ মাসের প্রথম দিকে ভাইরাস শনাক্তকরণের পর থেকে ২৫ মিলিয়নেরও বেশি লোককে সহায়তা প্রদানে সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনীর আওতা সম্প্রসারিত করেছেন। তিনি জানান, ‘মহামারীটির দ্বিতীয় ধকল সামাল দিতে ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code