সর্বশেষ

বন্যায় মৃত্যু বাড়ছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থারও রুগ্ন চিত্র

প্রকাশিত: ৩১. আগস্ট. ২০২৪ | শনিবার


Manual8 Ad Code

ডেস্ক রিপোর্ট : দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা আরও বেড়েছে। শুক্রবারের তুলনায় মৃতের সংখ্যা পাঁচজন বেড়ে শনিবার পর্যন্ত ৫৯ জনের মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। নতুন করে যে ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, তারা সবাই শিশু। আর বন্যায় সবচেয়ে মারা গেছে ফেনীতে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ফেনীতে ২৩, কুমিল্লায় ১৪, নোয়াখালীতে ৯, চট্টগ্রামে ৬, কক্সবাজারে ৩, খাগড়াছড়িতে ১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১, লক্ষ্মীপুরে ১ ও মৌলভীবাজারে ১ জন রয়েছেন। মৌলভীবাজারে একজন নিখোঁজ রয়েছেন।

শনিবার পর্যন্ত ১১টি জেলার ৬৮টি উপজেলা বন্যাপ্লাবিত আছে। জেলাগুলো হলো ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট।

পানিবন্দী বা ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয়ের জন্য মোট ৩ হাজার ৯২৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩০৫ জন মানুষ এবং ৩৬ হাজারের বেশি গবাদিপশুর আশ্রয় মিলেছে।

Manual2 Ad Code

বন্যা পরিস্থিতির কথা জানাতে গিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, সিলেট, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারে বন্যা পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

এদিকে, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার রুগ্ন চিত্র উঠে আসছে। অধিকাংশ এলাকায় হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক ডুবে আছে, যেগুলো ভেসে উঠেছে সেগুলোতে কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ অবস্থায় একের পর এক হাসপাতালে দৌড়ঝাঁপ করেও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না রোগীর স্বজনরা। সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।এলাকাগুলোতে পয়নিষ্কাশনের পানি-পুকুর খালের পানি এখন সব বানের পানিতে একাকার। ডুবে গেছে বিশুদ্ধ খাবার পানির টিউবওয়েল- ধোয়ামোছা ও গোসলের জন্য ব্যবহৃত পানির উৎস পুকুর খাল। দূষিত পানির ঢুকছে ঘরে। পা ফেললেই কালো দুর্গন্ধযুক্ত পানি। বন্যার পানি দীর্ঘ সময় লোকালয়ে আটকে থাকায় চর্মরোগ, ডায়রিয়া, কলেরাসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বেশি ঝুঁকিতে পড়ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। স্বাস্থ্যবিভাগ বলছে, প্রতিটি ইউনিয়নে চিকিৎসা সেবা দেয়া অব্যাহত আছে।

বিশেষ করে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর ভিড় বাড়ছে। অনেকে ঘরেও চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে আক্রান্ত রোগীর ৯০ ভাগই শিশু বলে জানান চিকিৎসকেরা।

২৫০ শয্যার ফেনী জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মোট শয্যা ১৮টি; কিন্তু শনিবার বেলা একটা পর্যন্ত এখানে ডায়রিয়ার রোগী ছিল ১৫৬ জন। অর্থাৎ শয্যার আট গুণ বেশি ডায়রিয়ার রোগী। এমনকি হাসপাতালের নার্সরাও আক্রান্ত হয়েছেন ডায়রিয়ায়।

Manual1 Ad Code

শুধু ফেনী নয়, কুমিল্লা, নোয়াখালী, খাগড়াছড়ি, লক্ষীপুরসহ অন্য এলাকাগুলোর চিত্রও একই। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ভীড়। এসব এলাকার হাসপাতাল ২২ আগস্ট থেকে পানিতে ডুবে ছিল। দুই দিন আগে পানি নেমেছে। নিচতলার প্রতিটি কক্ষ ডুবে ছিল। অনেক যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়েছে। নষ্ট হয়েছে ওষুধপত্রও। ডায়রিয়া ওয়ার্ডটিও পানিতে ডুবে গিয়েছিল। এখন পরিষ্কার করে ওখানেই রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।

Manual8 Ad Code

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আসিফ ইকবাল বলেন, বন্যা-পরবর্তী ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। বাচ্চারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। খাওয়ার পানি ও খাবার থেকে মূলত এটা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফেনী জেলা সিভিল সার্জন মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, ডায়রিয়ার চাপ খুব বেশি। উপজেলা, জেলা সব হাসপাতালে রোগী বেড়েছে। ডায়রিয়ার স্যালাইন এবং ওআরএসের সংকট আপাতত তেমন নেই। তবে আরও জোগান দরকার।

কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে, বন্যার প্রভাবে ডায়রিয়া, রেসপিরেটরি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (আরটিআই), চর্মরোগ, চোখের প্রদাহ, সাপে কাটাসহ মানুষ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন নতুন নতুন রোগী আসছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে।

Manual4 Ad Code

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code