সর্বশেষ

» ট্রান্সফ্যাটজনিত হৃদরোগ ঝুঁকি বাড়ছে

প্রকাশিত: ২৯. সেপ্টেম্বর. ২০২০ | মঙ্গলবার


Manual8 Ad Code

চেম্বার ডেস্ক: কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ বা হৃদরোগ পৃথিবীব্যাপী মৃত্যুর একক কারণ হিসেবে শীর্ষে। যেসব কারণে হৃদরোগ ঝুঁকি বাড়ে, ট্রান্সফ্যাট তার মধ্যে অন্যতম। আশঙ্কার কথা হল- ট্রান্সফ্যাটজনিত হৃদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ।

দেশে প্রতিবছর ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় হৃদরোগে। যার মধ্যে ৪ দশমিক ৪১ শতাংশের জন্য দায়ী ট্রান্সফ্যাট। বিশ্বে ট্রান্সফ্যাটের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। কিন্তু ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় এ সংক্রান্ত মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না।

আজ বিশ্ব হার্ট দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘হৃদয় দিয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধ’। এ উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানা কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।

Manual6 Ad Code

ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল বা পিএইচও, যা বাংলাদেশে ডালডা বা বনষ্পতি ঘি নামে পরিচিত। ভেজিটেবল অয়েল বা উদ্ভিজ তেল (পাম, সয়াবিন ইত্যাদি) যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেশন করা হলে তেল তরল অবস্থা থেকে কঠিন আকার ধারণ করে। এ প্রক্রিয়ায় ট্রান্সফ্যাটও উৎপন্ন হয়।

Manual7 Ad Code

এছাড়া ভাজাপোড়া খাদ্যে একই ভোজ্য তেল উচ্চ তাপমাত্রায় বারবার ব্যবহারের কারণেও খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট সৃষ্টি হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির দৈনিক ট্রান্সফ্যাট গ্রহণের পরিমাণ হওয়া উচিত মোট খাদ্যশক্তির ১ শতাংশের কম। অর্থাৎ দৈনিক ২০০০ ক্যালোরির ডায়েটে হলে ট্রান্সফ্যাট হতে হবে ২ দশমিক ২ গ্রামের কম।

সম্প্রতি ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকার পিএইচও নমুনার ৯২ শতাংশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুপারিশ করা ২ শতাংশ মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্সফ্যাট রয়েছে। এ গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি ১০০ গ্রাম পিএইচও নমুনায় সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ৯ গ্রাম পর্যন্ত ট্রান্সফ্যাটের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে, যা ডব্লিউএইচও’র সুপারিশ করা মাত্রার তুলনায় ১০ গুণেরও বেশি। উচ্চমাত্রায় ট্রান্সফ্যাট গ্রহণ হার্ট অ্যাটাকসহ হৃদরোগজনিত মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায়।

Manual7 Ad Code

জানা গেছে, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করেছে। কমিটির আওতায় ইতোমধ্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে একটি ধারণাপত্র তৈরি করা হয়েছে।

বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে এক প্রতিক্রিয়ায় গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে সারাবিশ্ব একত্রিত হচ্ছে। খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ এমন এক সাশ্রয়ী পদক্ষেপ, যা হৃদরোগজনিত অসুস্থতা ও মৃত্যুঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি অসংক্রামক রোগ সংক্রান্ত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৩ দশমিক ৪ অর্জনে সহায়তা করবে।

হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমান বলেন, ট্রান্সফ্যাট ক্ষতিকর চর্বিজাতীয় খাবার। এটি রক্তের ‘ভালো’ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় ও ‘খারাপ’ কোলেস্টরেলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। রক্তে অতিরিক্ত মাত্রার খারাপ কোলেস্টেরল হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

তিনি বলেন, একজন মানুষ যত বেশি ট্রান্সফ্যাট খাবেন, তার হার্ট ও রক্তনালি রোগের ঝুঁকিও তত বাড়বে। ট্রান্সফ্যাট এত অস্বাস্থ্যকর যে আমেরিকার খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন সংস্থা-এফডিএ সম্প্রতি খাদ্য প্রস্তুকারীদের খাবার ও পানীয়গুলোয় কৃত্রিম ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস যোগ করতে নিষেধ করেছে। সংস্থাটি আশা করে, এ পদক্ষেপ নেয়ায় প্রতিবছর হাজার হাজার হার্ট অ্যাটাক ও মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব।

Manual3 Ad Code

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code