সর্বশেষ

» বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৭. অক্টোবর. ২০২২ | বৃহস্পতিবার

চেম্বার ডেস্ক:: অনেক বাধা অতিক্রম করে এবং নিজস্ব অর্থায়নে পায়রা সমুদ্রবন্দরের কাজ শুরু হয় এবং আরও এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জাতির পিতা বলেছিলেন, আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। ঠিকই আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারে নাই।’ আজ বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি পায়রা বন্দরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনের সময় এই কথা বলেন।

প্রায় ১১ হাজার ৭২ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের মধ্যে রয়েছে বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং, আটটি জাহাজের উদ্বোধন, প্রথম টার্মিনাল এবং ছয় লেনের সংযোগ সড়ক ও একটি সেতু নির্মাণ।

প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা থেকে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য একটি ফান্ড করা হয়। এই ফান্ডের নাম বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড। সেখান থেকে স্বল্প সুদে ঋণ হিসেবে টাকা দেওয়া হয়েছে পায়রা বন্দরের উন্নয়নে।

শেখ হাসিনা বলেন, রিজার্জের টাকা গেছে মানুষের খাদ্য কেনায়, মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর জন্য। এটা কেউ চিবিয়ে খায়নি। এই টাকা মানুষের কাজে লাগছে। মানুষের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের আমদানিতে বিভিন্ন কাজে আমরা কাজে লাগাচ্ছি। রিজার্ভের টাকা সমুদ্রবন্দরকে লোন দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পায়রা নদীতে ড্রেজিং হয়ে গেলে এই নৌপথটা একেবারে আমরা উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত নিয়ে যাব। পাশাপাশি আসাম ও ভুটান পর্যন্ত নৌপথ চালু করতে পারব। আমাদের চট্টগ্রাম এবং মংলা বন্দর ভুটান, নেপাল এবং ইন্ডিয়াকে ব্যবহার করবার জন্য আমরা তাদেরকে সুযোগ দিয়েছি। পায়রা বন্দরটাও কিন্তু একসময় অন্য ধরনের একটা গুরুত্ব বহন করবে।

তিনি বলেন, আজকে আমরা পায়রা বন্দর একই সাথে আটটি জাহাজের উদ্বোধন করব। সেই সঙ্গে ছয় লেন সংযোগ সড়ক, আন্ধারমানিক নদীর উপরে সেতুর ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন হতে যাচ্ছে। বন্দরে আটটি জাহাজের মধ্যে সাতটি আমাদের দেশে তৈরি। এটা দেশের বিভিন্ন শিপইয়ার্ডে তৈরি করা হয়েছে।

সরকারপ্রধান জানান, ঢাকা-কুয়াকাটা সড়কটি কিছুদিনের মধ্যেই চার লেন করা হবে।

দেশের দীর্ঘসময়ের এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি নৌপথকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেই। কারণ নৌপথ সবচেয়ে অল্প খরচে করা যাবে এবং নৌ পথে সারা বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারব। ফলে আমাদের বাংলাদেশের নদীমাতৃক দেশ আমাদের সড়কপথ, রেলপথ, নৌপথ বিমান যোগাযোগ সবই আমাদের সমন্বিতভাবে হচ্ছে। এখানে আমাদের নৌবাহিনীর ঘাঁটি তৈরি হয়েছে। সেনাবাহিনীর একটি সেনা ছাউনি করা হয়েছে। বিমান বাহিনীর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ শুধুমাত্র সড়কে নয়, সবদিক থেকে আমরা একটা যোগাযোগ করতে পারছি।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বন্দরের কার্যক্রম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক করিডোরে পায়রা সমুদ্র বন্দরের যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।

 

 

এর ফলে দেশে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা, দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে এবং বহু লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।
চিলমারী বন্দর চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সরকারপ্রধান। এছাড়া দেশের উত্তর এবং মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন ফেরিরোড চালুকরণ এবং নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে কাজ করা হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, খুলনার নদীর নাব্যতা উন্নয়ন, ঢাকা নদী বন্দরের চারপাশের নদীর ড্রেজিং করা এবং নৌপথ সচল করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। আমাদের গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলো পরিষ্কার রাখার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
বিশ্বের নদীর উন্নয়ন হলে দেশের মানুষেরা অর্থনীতিতে যেমন সমৃদ্ধ আসবে একইভাবে বৈদেশিক পর্যটকদের বাংলাদেশে আগমন ঘটবে বলে জানান সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত দেশ। দেশের সবগুলো অঞ্চলের মানুষ সমান উন্নত জীবন পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমরা দেশের প্রতিটা ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছিলাম। তবে সারা বিশ্বের উন্নত দেশগুলো আজ জ্বালানি সংকটে ভুগছে, বিদ্যুৎ সংকটে ভুগছে। আমরাও তার বাইরে না। হঠাৎ সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। তার উপরে – মড়ার উপর খাড়ার ঘা হচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। সেইসাথে স্যাংশন। যার ফলে আজকে সারাবিশ্বের সাধারণ মানুষগুলি ভুক্তভোগী। তারা কষ্টে আছে। কারা লাভবান হচ্ছে জানিনা, হয়তো যারা অস্ত্র ব্যবসা করেন তারা লাভবান হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ কিন্তু শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষগুলো কষ্ট পাচ্ছে। বিশ্ববাসীর কাছে আবেদন থাকবে, এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। স্যাংশন প্রত্যাহার করতে হবে। মানুষকে বাঁচার সুযোগ দিতে হবে। জীবন মান ধরে রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

 

তিনি বলেন, আমি চাই মানুষগুলো বাচুক। সুন্দর করে বাঁচার সুযোগ করে দেওয়া হোক। এই অস্থিরতা বন্ধ হোক। শান্তির সুবাতাস বইতে শুরু করুক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’ পায়রা সমুদ্র বন্দরকে গভীর সমুদ্র বন্দর করা হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

July 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031