সর্বশেষ

» মিয়ানমারে কারফিউ ভেঙে ব্যাপক বিক্ষোভ,প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে জলকামান ব্যবহার

প্রকাশিত: ০৯. ফেব্রুয়ারি. ২০২১ | মঙ্গলবার

চেম্বার ডেস্ক:: মিয়ানমারের রাজধানীসহ দেশটির বড় শহরগুলোতে কারফিউ ও চারজনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরেও টানা চতুর্থ দিনের মতো রাজধানীতে ব্যাপক বিক্ষোভ করা হয়েছে। প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে জলকামান ব্যবহার করেছে পুলিশ।

 

রয়টার্স জানিয়েছে, পুলিশ প্রতিবাদকারীদের চলে যেতে বললেও তারা প্রত্যাখ্যান করে, এর পরই তাদের ওপর জলকামান থেকে পানি ছোড়া হয়। এর আগের দিন সোমবারও নেপিদোতে বিক্ষোভরত প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে জলকামান ব্যবহার করেছিল পুলিশ।

সেনা অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করে সোমবার টানা তৃতীয় দিনের মতো বিপুল গণজমায়েতে বিক্ষোভ হয়। সরকারি অফিসে কর্মবিরতি পালন করেন অনেকে। বিক্ষোভ দমনে কিছু কিছু জায়গায় কারফিউসহ জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

 

জেনারেলের ভাষণ অভ্যুত্থানবিরোধীদের মধ্যে ক্ষোভ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক ছবিতে দেখা গেছে যেখানে মানুষ টিভি স্ক্রিনের সামনে থালাবাসন পিটিয়ে প্রতিবাদ করছেন।

 

কর্মবিরতি পালনকারী এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেন, ‘আজ আমরা পেশাজীবীরা, বিশেষ করে চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও শিক্ষকরা যাঁরা সরকারি চাকুরিজীবী, আমরা রাস্তায় নেমেছি এটা দেখাতে যে, আমরা ঐক্যবদ্ধ এবং আমাদের লক্ষ্য একটাই, তা হলো স্বৈরাচারের পতন ঘটানো।’

 

বিবিসির খবরে বলা হয়, ভাষণে জেনারেল মিন অং হ্লাইং দমনপীড়নের ভয়ভীতি দেখানোর বদলে ক্ষমতা দখলের কারণ ব্যাখ্যার দিকে মনোযোগী ছিলেন। নাগরিকদের প্রতি ‘আবেগের বশবর্তী না হয়ে সত্য তথ্য-উপাত্ত দেখার আহ্বান’ জানান তিনি।

 

নভেম্বরের নির্বাচনে অনিয়ম হয়েছে দাবি করে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সু চিসহ নির্বাচিত নেতাদের আটক করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নেয় সেনাবাহিনী। এরই মধ্যে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে সেনাবাহিনী। নভেম্বরের ওই জাতীয় নির্বাচনে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী সু চির দল এনএলডি বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। সেনা সমর্থিত বিরোধী দল শোচনীয় অবস্থায় পড়ে।

 

সোমবারের ভাষণে সেনা প্রধান মিন অং হ্লাইং বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নভেম্বরের নির্বাচনে ভোটার তালিকার অনিয়ম তদন্তে ব্যর্থ হয়েছে এবং নির্বাচনি প্রচারে সমতা নিশ্চিত করতে পারেনি।’

 

সবুজ রঙের সামরিক পোশাকে মিন অং হ্লাইং সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনে বিজয়ীদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হবে। সংস্কারকৃত একটি নির্বাচন কমিশন ওই ভোটের দেখভাল করবে।’

ইয়াঙ্গুনের এক আন্দোলনকারী দাও মোই বলেন, ‘আমরা সামরিক জান্তা চাই না। আমরা কখনো এই জান্তাকে চাইনি। কেউ একে চায় না। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সবাই প্রস্তুত।’

মিয়ানমারে গত নভেম্বরের নিবাচনে বিজয়ী সংসদ সদস্যদের সংসদে বসার দিন সামরিক অভ্যুত্থান হয়। সামরিক জেনারেলরা বলছেন, ভোটে জালিয়াতি হয়েছিল। তবে দেশটির নির্বাচন কমিশন এ দাবি খারিজ করে দেয়।

রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সোমবার প্রথমবারের মতো বিক্ষোভ হওয়ার কথা স্বীকার করে দাবি করেছে, তারা দেশের স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছেন।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন স্টেশন এমআরটিভিতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতি পাঠ করে বলা হয়, ‘শৃঙ্খলা না থাকলে গণতন্ত্র ধ্বংস হতে পারে। রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা, জননিরাপত্তা ও আইনের শাসন লঙ্ঘনকারী কার্যক্রম রোধে আমাদের আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।’

তবে, অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে মিয়ানমারের নিয়ন্ত্রণ নিজ হাতে নেয়া সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইং ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো সোমবার রাতে টেলিভিশনে প্রচারিত ২০ মিনিটের এক ভাষণ দেন। এ সময় বিশৃঙ্খলার কথা উল্লেখ করেননি।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

July 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031