সর্বশেষ

» গাছ কেটে উজাড়, উৎকোচ ছাড়া কিছুই বুঝেন না কানাইঘাট বিট কর্মকর্তা!

প্রকাশিত: ২৩. ডিসেম্বর. ২০২০ | বুধবার

Manual1 Ad Code

কানাইঘাট প্রতিনিধি:: সিলেটের কানাইঘাটে উপজেলায় সরকারী ফরেস্ট’র গাছপালা উজাড় ও বন বিভাগের জায়গা দখল ও নির্বিচারে রাস্তাঘাটের গাছ-পালা কেটে নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা বিট কর্মকর্তা সুরেশ চন্দ্র মিস্ত্রী কানাইঘাটে যোগদান করার পর থেকে সরকারি রাস্তার গাছ-পালা কেটে নেওয়া সহ বনাঞ্চল উজাড় হচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বিট কর্মকর্তা সুরেশ চন্দ্র অবৈধ কর্মকান্ডের মাধ্যমে করাতকল মালিক ও কাঠ, ফার্নিচার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত উৎকোচ আদায়সহ বন বিভাগের জায়গা থেকে গাছপালা কর্তন ও বন অঞ্চলের জায়গায় প্রভাবশালীদের বেদখলের চলে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, বন্ধ হওয়া লোভাছড়া পাথর কোয়ারী খুলে দেওয়ার কথা বলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এডভোকেট শ ম রেজাউল করিমের নাম ভাঙ্গিয়ে পাথর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা এ বিট কর্মকর্তা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পাথর ব্যবসায়ী। তাদেরকে উপজেলা বিট কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন; মন্ত্রীর সাথে তার ভাল সম্পর্ক রয়েছে। তিনি তাদেরকে লোভাছড়া পাথর কোয়ারী লিজ এনে দিতে পারবেন এমন আশ্বাস দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। উৎকোচ ছাড়া যেন ওই বিট কর্মকর্তা কিছুই বুঝেন না; এমনটাই অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। গাছ কাটার করাতকল থেকে শুরু করে তার অনুকূলের সর্বত্র তাকে উৎকোচ দিতে হয়।

Manual4 Ad Code

গত সোমবার সরেজমিনে পৌরসভাস্থ একটি করাতকলে আব্দুস ছুকহান নামের স্থানীয় এক যুবক জানান- তিনি তার বাড়ি থেকে একটি গাছ নিয়ে এসেছিলেন। সেই গাছটি করাত কলে কাটতে নানা আইন দেখিয়ে কাটতে বাঁধা দেন ওই বিট কর্মকর্তা। পরে তাকে ১ হাজার টাকা উৎকোচ দিয়ে কাজটি করে নেন।

Manual2 Ad Code

সড়কের বাজারের রফিক উদ্দিন জানান- তিনি বাংলাবাজার থেকে কিছু গাছ পিকআপে করে নিয়ে এসেছিলেন। একইভাবে বিট কর্মকর্তা তা আটকে দেন। পরে তিনিও ১ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে গাছগুলো ছাড়িয়ে নেন। এভাবে অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে বিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। একইভাবে তিনি মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে এলজিইডি’র রাস্তার পাশসহ উজাড় করছেন শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বনাঞ্চল।

জানা যায়, উপজেলা বিট কর্মকর্তা সুরেশ চন্দ্র তার বিশ্বস্ত লোকদের দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই এলজিইডি’র রাস্তার পাশের বড় বড় গাছগুলো কেটে নিচ্ছেন।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপি’র সুরইঘাট গড়াখাই রাস্তার দু’পাশের অসংখ্য গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। গাছের মুড়োগুলো এখনো তার সাক্ষ্য বহন করছে। কোন কোন মুড়ো বালু দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে আব্দুল হাসিম ও আব্দুর রশিদ জানান- তারা দেখেছেন গত রবিবার বন-কর্মকর্তার লোক নামে পরিচিত নিজাম উদ্দিন তার দলবল নিয়ে বড় বড় এই গাছগুলো কাটছে। অনেক শিশু কিশোর জানিয়েছেন গাছগুলো কেটে সুরইঘাটের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এভাবে প্রায় প্রতিদিন দু-চারটি করে দামী বেলজিয়ামের গাছগুলো কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বন কর্মকর্তার লোক নামে পরিচিত নিজাম উদ্দিনের কাছে গাছ কাটার বিষয়টি জানতে চাইলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে সুরমা ডাইকের লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির মন্দিরের ঘাট এলাকা থেকে বেআইনীভাবে বিট কর্মকর্তা নির্দেশে অসংখ্য গাছপালা কেটে নেওয়া হচ্ছে। উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পুর্ব ইউপি’র বন বিভাগের মালিকানাধীন ঢেওয়াটিলা ও সেগুন বাগানসহ তার আশপাশের হাজার হাজার একর জুড়ে বাগানগুলো উজাড় করা হচ্ছে। নানা অজুহাতে বন-কর্মকর্তা তা ধ্বংস করে ফেলেছেন।

Manual1 Ad Code

স্থানীয়রা জানিয়েছেন- কয়েক লক্ষ টাকার গাছ উজার করে ওই সব টিলা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার পাথর উত্তোলন করে গত মৌসুমে বিক্রি করেছেন। ওই এলাকার বন কর্মকর্তার লোক নামে পরিচিত ঢেওয়াটিলার দেলোয়ারসহ একটি চক্র বনবিভাগের জায়গা বিট কর্মকর্তার যোগসাজশে দখল করে নিচ্ছে বলে স্থানীয় অনেকে জানিয়েছে। তারা ঢেওয়াটিলার মানিক নামের একজন ও উজান বারাপৈতের আনিছ সহ বহু লোকের বসত বাড়ি দখল করে নিয়েছেন।

সচেতন মহল জানিয়েছেন কি ভাবে একজন বিট কর্মকর্তা কিভাবে একজন মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে সরকারী বন অঞ্চল উজাড়, রাস্তা-ঘাট থেকে গাছ-পালা কেটে সহযোগিতা প্রদান সহ রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় উত্তীর্ণ হয়েছে তার বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে উপজেলা বিট কর্মকর্তা সুরেশ চন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- সুরইঘাট গড়াখাই রাস্তার গাছ কাটা সহ সরকারী বনাঞ্চলের গাছপালা কেটে নেওয়ার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। মন্ত্রী এডভোকেট শ ম রেজাউল করিম তার এলাকার লোক তার নাম ভাঙ্গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহারের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি তা মিথ্যা উল্লেখ বলেন- যেহেতু রাজনৈতিক ভাবে দেশ চলছে সেহেতু তিনি লোভাছড়া কোয়ারীর লিজের জন্য তদবীর করছেন। টাকা পয়সার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন- কোথায়ও তার মাধ্যমে বন অঞ্চল ধ্বংস করা হয়নি বরং তা নতুন করে গড়ে তুলার চেষ্টা করছেন তিনি।

Manual4 Ad Code

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code