সর্বশেষ

» মেজর সিনহা হত্যায় কারা জড়িত তদন্তে খতিয়ে দেখা হচ্ছে : র‍্যাব

প্রকাশিত: ০৮. আগস্ট. ২০২০ | শনিবার

চেম্বার ডেস্ক:: কক্সবাজারের টেকনাফে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার উদ্দেশ্য, সুনির্দিষ্টভাবে কারা জড়িত তদন্তে এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। এ ছাড়া গণমাধ্যমে প্রকাশিত পুলিশের ফোনালাপ বিষয়ে প্রয়োজনে কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান র‍্যাব কর্মকর্তা।

আজ শনিবার র‍্যাব সদর দপ্তরে বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, রাশেদ হত্যা মামলাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় এর তদন্তে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের মোটিভ কী ছিল, তদন্তে আমরা এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে এবং হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে কোন কোন ব্যক্তি দায়ী, দায়ীদের নিরূপণ করাই আমাদের তদন্তের মূল লক্ষ্য হবে।’

কক্সবাজারে তথ্যচিত্র নির্মাণ করছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ। ৩১ জুলাই রাতে মেরিন ড্রাইভে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি। ওই সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন সহযোগী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাত। গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। সিফাতের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে তাঁর নিজ জেলা বরগুনায়। তবে পুলিশ দাঁড়াতে দেয়নি প্রতিবাদকারীদের।

সিফাত ও শিপ্রার মুক্তি ও নিরাপত্তার দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের সামনে। মানববন্ধনকারীদের একজন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছিলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি যে সিফাতের কোনো ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। যেহেতু সে একেবারে মেইন আই উইটনেস।’

মামলাটির তদন্তে থাকা র‍্যাব কর্মকর্তারাও মনে করছেন, সিফাত ও শিপ্রা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী।  আইনি সহযোগিতা দিয়ে তাদেরকে বের করার চেষ্টা চলছে বলে জানান র‍্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক। তিনি বলেন, ‘সিফাত এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। অপরপক্ষে সংশ্লিষ্ট পুলিশ যে মামলাটি করেছে তাতে একজন অপরাধী। সংশ্লিষ্ট যে আইনজীবী যারা আছেন তাঁরা সিফাতকে এবং শিপ্রাকে জামিনে বের করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

সিনহা রাশেদের মৃত্যুর পর কক্সবাজারের পুলিশ সুপারের (এসপি) সঙ্গে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মুঠোফোনে কথোপকথন বিষয়ে প্রয়োজনে এসপিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান এই র‍্যাব কর্মকর্তা।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘ফোন আলাপের বিষয়টি যেটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে সেটি র‍্যাবের নজরে এসেছে। এই ফোনালাপের বিষয়টি আমরা যাচাই-বাছাই করছি। যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এই কর্মকর্তা আরো জানান, আগামীকাল রোববার থেকে আসামিদের নিজেদের হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন স্থানীয় র‍্যাব কর্মকর্তারা।

গত ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনার বিচার চেয়ে গত বুধবার কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।

এর আগে গত ২ আগস্ট বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বরত পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ সবাইকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। আর ওসি প্রদীপকে গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম থেকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।

এরপর বৃহস্পতিবার শেষ বিকেলে ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ সাত সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। অপরদিকে বাদীপক্ষ তাদের আটক ও পরে রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালত ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকত ও এসআই নন্দদুলালকে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করেন। আর বাকি চারজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।

আজ শনিবার বিকেল ৩টার পর থেকে কক্সবাজার জেলা কারাগারের ফটকে মামলার আসামি সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চার পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে র‍্যাবের তদন্তদল।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজ দুপুর দেড়টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে মেজর সিনহা রাশেদ হত্যা মামলার রিমান্ড ও জিজ্ঞাসাবাদের আদেশপ্রাপ্ত সাত আসামির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জেলা কারাগারে পৌঁছেছে।’

‘ফলে কারাফটকে র‌্যাব সদস্যরা চার আসামিকে বিকেলে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন। আগামীকাল রোববার সাত দিনের রিমান্ডের আদেশপ্রাপ্ত আসামিদের র‌্যাব হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে’, যোগ করেন জেল সুপার।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

October 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031