সর্বশেষ

অসহায় মানুষের আশ্রয়স্থল সিলেটের এম এ শাকুর সিদ্দিকী

প্রকাশিত: ২২. অক্টোবর. ২০২০ | বৃহস্পতিবার

Manual2 Ad Code

জসিম উদ্দিন :

সুদূর যুক্তরাজ্যে থেকেও ভুলে যাননি নিজের জন্মভূমির কথা। ভুলে যাননি নিজ এলাকার দুঃখী মানুষের কথা। তাইতো জন্মস্থান সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার অসহায়, কর্মহীন, সহায়-সম্বলহীন মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে প্রবাসে থেকেও শেকরের টানে দেশের মানুষের কথা শুনে সব সময়ই এগিয়ে এসেছেন এই প্রবাসী। শুধু তাই নয় এগিয়ে নিচ্ছেন শিক্ষা ব্যবস্থাও।

 

Manual3 Ad Code

তাঁর জন্ম এক অজপাড়া গায়ে হলেও যুক্তরাজ্যের এ ব্যবসায়ী নিজের বিলাসবহুল জীবনের স্বাদ যেনো মাতৃভূমি পায়, নৌকার বদলে যেনো চলে মোটর গাড়ী। এমন অনুভুতির তাড়নায় নিজের কষ্টে অর্জিত তিলে তিলে গড়া নিজ অর্থ ব্যায়ে গড়ে তুললেন হাজি আব্দুল হামিদ সড়ক ও হাজি শওকত আলী সেতু। এখানেই শেষ নয় নির্মাণ করলেন আরও বড় দুটি কালভার্ট। এ কর্মকান্ডগুলোতে বেশ প্রশংসীতও হয়েছেন বার বার।

 

তিনি মানব সেবার কথা চিন্তা করে ১৯৮৩ সালে গড়ে তুলেন ‘কানাইঘাট এসোসিয়েশন ইউকে’ নামে একটি সংগঠন। যার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি দায়িত্বে রয়েছেন আজও। এ সংগঠনের কাজই শুধু অসহায় মানুষের মূখে হাসি ফুটানো।

 

এরই ধারাবাহিকতায় পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিতে ২০০৮ সালে গড়ে তুলেন ‘কানাইঘাট এডুকেশন ট্রাষ্ট ইউকে’ নামেও আরেকটি শিক্ষমূলক সংগঠন। এর মাধ্যমে কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলার পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের অনুদান দিয়ে আসছেন।

 

এতক্ষণ যার কথা বলছিলাম- তিনি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার নিজ বাউরভাগ পশ্চিম গ্রামের হাজি শওকত আলী চৌধুরী ও খাদিজা বেগম চৌধুরী দম্পতির সন্তান লন্ডন প্রবাসি দানবীর এম এ শাকুর সিদ্দিকী। যার নেশা শুধুই সমাজের অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলোকে সেবা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। শুধু তিনিই নয় তাঁর পিতা শওকত আলীও জীবনের অর্ধেক সময় সমাজের অবহেলিত ও অনাহারে থাকা মানুষগুলোর মূখে হাসি ফুটিয়ে গেছেন।

 

মুটো ফোনে কথা হয় দানবীর সাকুর সিদ্দিকীর সাথে এ সময় তিনি বলেন, অসংখ্য পীর, বুজুর্গ, অলি আওলিয়া ও উলামাদের দেশ বলে খ্যাত সিলেটের অন্যতম উপজেলা কানাইঘাট। বাংলাদেশ তথা সিলেটের একটি প্রাচীন ইতিহ্যবাহী জনপদ এটি। ষাট-সত্তরের দশকে কানাইঘাটের খুবই অল্প সংখ্যক মানুষ বিলেতে পাড়ি জমান। বিদেশে থাকলেও প্রবাসী এই মানুষগুলোর হৃদয়ে সবসময় দেশ। দেশ আর দেশের মানুষের পাশে থাকার লক্ষ্যেই যুক্তরাজ্যে ১৯৮৩ সালে ‘কানাইঘাট এসোসিয়েশন ইউকে’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন দুর্যোগে, বা মানবিক আবেদনে এই সংগঠন তাদের শিকড় কানাইঘাটসহ বিভিন্ন উপজেলাগুলোতে সাহায্য করে আসছে।

 

Manual5 Ad Code

তিনি আরও জানান, চলমান করোনা ভাইরাসে (কভিড-১৯) কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশেও দাঁড়িয়েছে ‘কানাইঘাট এসোসিয়েশন ইউকে।’ সদস্যদের অনুদানককৃত নিত্যপণ্য ও নগদ অর্থসহায়তা করেছে সংগঠনটি।

Manual3 Ad Code

 

শুধু তাই নয়, বন্যায় যেমন দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, তেমনি দাঁড়িয়েছে শীতার্ত মানুষের পাশেও। প্রতিবছরই প্রাকৃতিক দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে আমাদের গড়ে তুলা সংগঠনটি।

 

প্রতিষ্ঠাতা এ সভাপতি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে আমরা প্রবাসীরা এই মুহূর্তে ভালো নেই। সবাই গৃহবন্দি। কাজ নেই অনেকের। কিন্ত প্রবাসী মানুষরা এতসব কষ্টেও নিজের কথা ভাবছেননা। দেশের অসহায় মনুষের কষ্ট দেখেই তাদের হৃদয় কাঁদছে।  যে কারণে এই মানবিক উদ্যোগ।

 

এম এ শাকুর সিদ্দিকী আরও জানান, পিছিয়ে পড়া অবহেলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান্নোয়নে ‘কানাইঘাট এডোকেশন ট্রাষ্ট ইউকে’ গড়ে তুলি। এই ট্রাষ্টের মাধ্যমে কানাইঘাট ছাড়াও জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট জকিগঞ্জসহ সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের বই-খাতা, কলম, স্কুল-কলেজ ফি, নগদ অর্থসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুদান প্রদান করা হয়।

 

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এভাবে যদি সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসতেন তাহলে বাংলাদেশ লন্ডনের চেয়েও ভালো অবস্থানে আসতে পারতো।’

Manual2 Ad Code

( লেখাটি লেখকের একান্ত নিজস্ব)

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code