সর্বশেষ

» বিয়ানীবাজার সীমান্তে থামছেনা মাদক পাচার ও চোরাচালান

প্রকাশিত: ১৩. মে. ২০২৩ | শনিবার

এটিএম তুরাবঃ সিলেটের বিয়ানীবাজার সীমান্তবর্তী পয়েন্টগুলো দিয়ে ভারত থেকে নিম্নমানের চিনি আসছে বিপুল পরিমাণে। একইসাথে অবাধে চলছে মাদক পাচার। এই মাদক পাচার ও চোরাচালান রোধে বিজিবি, পুলিশের তেমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। সরকারী দলের প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।

বিয়ানীবাজার সীমান্তে চোরাচালান বলতেই এখন যে পণ্য,সেটা হচ্ছে চিনি। গত প্রায় দুই বছর ধরে চিনির চোরাচালানের জেরে এখন কোনটা ভারতীয়, আর কোনটা দেশি চিনি-সেটা চেনা দায়।

সিলেটের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতীয় চিনি ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার থেকে ৬ হাজার ১০০ টাকায়। দেশি চিনির দাম ৬ হাজার ৭০০ থেকে ৬ হাজার ৮৫০ টাকা। দামের তারতম্য থাকায় চিনির চোরাচালান থামছে না।

অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে,বিয়ানীবাজারের সারপার সীমান্তে চিনি চোরাচালানের পাশাপাশি অবাধে মাদকও পাচার হচ্ছে। এই সীমান্ত এখন ইয়াবার নতুন রুট হয়ে উঠেছে।অরক্ষিত সীমান্ত এলাকার সুবিধা নিচ্ছে ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িত দুই দেশের বেশ কয়েকজন ইয়াবা কারবারি।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন,এসব পাচারকারীদেরকে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেন সরকারী দলের (আওয়ামীলীগের) স্থানীয় কয়েকজন নেতা।

অনুসন্ধানকালে বিয়ানীবাজারের সীমান্ত এলাকা নওয়াগ্রামের ব্যবসায়ী (মুদি দোকানদার) মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামানের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। সাহিদুজ্জামান বলেন,’আমি দীর্ঘদিন থেকে সীমান্ত এলাকায় ব্যবসা করি। আমার চোখের সামনেই অনেক ঘটনা ঘটে। আমি অনেক কিছু দেখি,কিন্তু প্রাণনাশের ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারিনা। নওয়াগ্রামের বাসিন্দা ও আওয়ামীলীগ নেতা সাব্বির আহমদ,আব্দুল ওয়াহিদ তারেক,ছাত্রলীগ নেতা কাওছার আহমদ ও সুহেল সহ ৮/১০ জন চিনি চোরাচালান ও মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে আমার কাছে মনে হয়েছে।বিজিবি এবং পুলিশ প্রশাসনের সাথে যোগসাজস করে দীর্ঘ দিন থেকে তারা সীমান্তে পাচার কারবার নিয়ন্ত্রণ করছেন।’

তিনি আরো বলেন,’পাচারের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা সরকার দলীয় নেতাকর্মী হওয়ায় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। অনেক ক্ষেত্রে প্রশাসন পাচারকারীদের সুরক্ষা দেয় বলে প্রতিয়মান হয়।’

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত অনেকে ফোন রিসিভ করেননি। যারা করেছেন-তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা সাব্বির বলেন,’এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা,আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে।’

ছাত্রলীগ নেতা কাওছার আহমদ বলেন,‘আমি চোরাচালান ও মাদক পাচারে জড়িত নই।’

আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল ওয়াহিদ তারেক বলেন,’একসময় চোরাচালানের সাথে জড়িত ছিলাম, কিন্তু এখন তা বাদ দিয়েছি। এক বছর আগে ছেড়ে দেওয়ার পরও বদনাম পিছু ছাড়ছে না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিবি সিলেট সেক্টরের অপারেশন শাখার অতিরিক্ত পরিচালক মেজর মো. মেজবাহ উদ্দীন রাসেল বলেন,চোরাচালানের বিষয়ে জিরো টলারেন্সে কাজ করছে বিজিবি। অবৈধভাবে দেশের ভেতরে কোনো কিছু যাতে ঢুকতে না পারে,সে বিষয়ে ২৪ ঘণ্টা সতর্ক দৃষ্টিতে টহল দিচ্ছে বিজিবি।

বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহসিন আহমদ বলেন,’ইয়াবা পাচারের সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত এলাকার দাগী কিছু লোক জড়িত রয়েছে। পুলিশ তাদের চিহ্নিত ও শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। জড়িত বেশির ভাগের অবস্থান ভারতের আসামে। কিছু লোক রয়েছে বিয়ানীবাজার উপজেলার। কিন্তু এরা বেশির ভাগ সময়ে দেশের বাইরে অবস্থান করে।’

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

June 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30