সর্বশেষ

» সিলেটে বাড়ছে এইডস, লোকলজ্জায় চিকিৎসাবিমুখ রোগীরা

প্রকাশিত: ১২. নভেম্বর. ২০১৮ | সোমবার

Manual3 Ad Code

সাইফুল আলম, অতিথি লেখক: 

এইডস হলে অবধারিত মৃত্যু; এ কথাটির ভিত্তি নেই এখন। মৃত্যু তো নয়ই, বরং দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসায় একেবারেই স্বাভাবিক অবস্থায় জীবনযাপন করছেন অনেকে। এমনকি, এইচআইভি পজিটিভ মায়েরাও চিকিৎসার মাধ্যমে একেবারেই সুস্থ্য-স্বাভাবিক সন্তান প্রসব করছেন। পরীক্ষা যত বেশি হচ্ছে রোগটি ধরা পড়ছে ততো বেশি।

তবে লোকলজ্জার ভয়ে এইচআইভি পরীক্ষা ও চিকিৎসার আওতায় না আসায় প্রবাসি অধ্যুষিত সিলেটে রোগটি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে; বলছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা।

২০০৭ সালে নিজের অজান্তেই এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হন প্রবাস ফেরত মহিউদ্দিন (ছদ্দনাম)। শুরুতে শারীরিক অবস্থা অতিমাত্রায় খারাপ থাকলেও প্রথমে একটি এনজিও ও পরে ওসমানী হাসপাতালের এআরটি সেন্টারে দীর্ঘ চিকিৎসায় একেবারেই স্বাভাবিক হয়ে ওঠেন তিনি।

Manual8 Ad Code

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এআরটি সেন্টারে চেক-আপ করতে আসা মহিউদ্দিনের (ছদ্দনাম) সাথে আলাপকালে জানান, তিনি এখন পুরোপুরি সুস্থ। দৈনন্দিন জীবনের সব কাজ করতে পারছেন। এমনকি তার থেকে সংক্রমণের ঝুঁকিও নেই। হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা নিয়েও তিনি বেশ সন্তুষ্ট।

Manual7 Ad Code

সরকারি হিসেব মতে ১৯৯৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সিলেট বিভাগে এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০৮০ জন। এর মধ্যে ৪৫৭ জন মারা গেছেন।

Manual6 Ad Code

সংশ্লিষ্টরা জানান, এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত প্রসূতি মা থেকে নবজাতকের যেন এইডস না হয় সে লক্ষ্যে ২০১৩ সালে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘পি.এম.টি.সি.টি’ প্রোগ্রাম চালু করে ইউনিসেফ। এরপর ২০১৭ সাল থেকে হাসপাতালের এআরটি সেন্টারে প্রসূতি মা ও সাধারণ এইডস রোগীদের ফ্রি চিকিৎসাসেবা শুরু হয়। এতে করে ৯ বছরে প্রায় শতভাগ সফলতায় এইডস আক্রান্ত মায়ের গর্ভ থেকে ৭২টি স্বাভাবিক শিশু জন্ম নেয়। সেই সাথে সম্পূর্ণ ফ্রি চিকিৎসায় সফলতার স্বাক্ষর রাখছে অন্যান্য এইডস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবাতেও।

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এআরটি সেন্টারের ফোকাল পার্সন ও মেডিসিন বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. আবু নঈম মোহাম্মদ বলেন, সরকার এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় বিনামূল্যে সবচেয়ে ভালো ঔষধ বরাদ্দ রেখেছে। যার জন্য যেরকম ঔষধ প্রয়োজন সেটা তাকে দেয়া হচ্ছে। ভালো ঔষধ পাচ্ছে বলেই শতকরা ৯৮ শতাংশ রোগী সুস্থ্যভাবে জীবনযাপন করছে।

তিনি বলেন, চিকিৎসা চলাকালীন রোগীদের এইডসের পাশাপাশি অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হলে সেটারও বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে এআরটি সেন্টারের আরও দুই থেকে তিনজন কাউন্সিলর হলে আরও ভালোভাবে সেবা দেয়া সম্ভব বলে জানান তিনি।

লোকলজ্জার ভয়ে অনেকে টেস্ট না করানো এবং চিকিৎসার আওতায় না আসায় প্রবাসি অধ্যুষিত সিলেটে রোগটি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। যত বেশি পরীক্ষা হচ্ছে ততো বেশি রোগটি ধরা পড়ছে। এসব ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা ও গোপনীয়তার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে; জানালেন- হাসপাতালের কর্মকর্তারা।

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, এই রোগ নিয়ে বসে থাকলে অবধারিত মৃত্যুর দিকে ধাবিত হবেন। শুধু অপরিকল্পিত শারীরিক সম্পর্কের কারণেই নয়, বিভিন্ন কারণে এইডস হতে পারে। তাই এইডস হলে ভয় নয়, সচেতনতার পাশাপাশি দ্রুত পরীক্ষা ও চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এককভাবে এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের সম্পূর্ণ ফ্রি চিকিৎসা দিচ্ছে সিলেট ওসমানী কলেজ হাসপাতাল।

এদিকে এআরটি সেন্টারে দায়িত্বরত আশফাক আহমেদ জানান, এখান থেকে এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের কাউন্সিলিং, যাবতীয় টেস্ট, এআরবি (ড্রাগ), ভাইরাল লোড টেস্ট, এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত প্রসূতি মা থেকে নবজাতকের যেন এইডস না হয় সে লক্ষ্যে চিকিৎসাসেবা, নবজাতকের ১৮ মাস পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ, এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত মায়ের দুধ যাতে খেতে পারে তার সুপরামর্শসহ এইচআইভি সংক্রান্ত যাবতীয় চিকিৎসা দেয়া হয়।

Manual2 Ad Code

কেউ প্রথমে সরাসরি এআরটি সেন্টারে আসতে না চাইলে ০১৭১৭৭৮১৪৯৩ (আশফাক) এই নাম্বারে কল করেও এইডস সম্বন্ধে প্রাথমিক ধারণা নিতে পারেন।

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code