সর্বশেষ

» বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত: ১২. সেপ্টেম্বর. ২০২০ | শনিবার


Manual5 Ad Code

চেম্বার ডেস্ক:: একুশে পদকপ্রাপ্ত বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের ১১ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শনিবার। ২০০৯ সালের এই দিনে ৯৩ বছর বয়সে মারা যান তিনি। ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন গুণী এই ব্যক্তি। আমৃত্যু তিনি ওই গ্রামেই ছিলেন।

 

প্রতিবার প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে তার উজানধলের সমাধি ও বাড়ি ঘিরে জড়ো হন অসংখ্য ভক্ত। বাড়িতে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, স্মরণসভা এবং রাতভর চলে বাউল করিমের গানের আয়োজন। তবে এবার করোনা পরিস্থিতিতে অনেকটা নীরবেই যাবে এই বাউলসম্রাটের মৃত্যুবার্ষিকী। মৃত্যু দিবসটিকে ঘিরে করিমের জন্মস্থান দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামেও নেই তেমন কোনো আয়োজন। শাহ আব্দুল করিমের পরিবার ও শাহ আব্দুল করিম স্মৃতি পরিষদ দিরাই এর উদ্যোগে করিমের গ্রামের বাড়িতে সীমিত পরিসরে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া জেলার ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ভক্তবৃন্দ এসে জড়ো হবেন তাঁর মাজার প্রাঙ্গণে। সেখানে তারা নিজেদের মতো করে তাদের গুরু বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমকে স্মরণ করবেন। সারা রাত ধরে গাইবেন করিমের গাওয়া ও লেখা সকল গান। এবার করোনাভাইরাসের কারণে কোনো স্থানে হচ্ছে না গানের আসর বা স্মরণসভা।

Manual3 Ad Code

শাহ আবদুল করিম জীবনভর তার গানে অবহেলিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির কথা বলে গেছেন। তার গানে যেমন প্রেম-বিরহ ছিল, তেমনি ছিল খেটে খাওয়া মানুষের কথা। একই সঙ্গে আধ্যাত্মিক ভাবনাও রয়েছে তার সৃষ্টিকর্মের বিশাল অংশজুড়ে। অভাব-অনটন, দুঃখ-দারিদ্র্যে বেড়ে ওঠা বাউল করিমের বয়স যখন ১২, তখন রাখালের চাকরি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী ধলবাজারের এক মুদি দোকানে কাজ নেন। দিনে চাকরি আর রাতে হাওর-বাঁওড় ঘুরে গান গাইতেন। ওই সময় গ্রামের নৈশবিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও পড়াশোনা হয়নি করিমের। গ্রামের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাউল, ভাটিয়ালি, পালাগান গাইতেন তিনি। পুরো ভাটি এলাকায় নাম ছড়াতে থাকে তার। এরপর বিভিন্ন আন্দোলনে গণসঙ্গীত গেয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করেন তিনি।

 

শাহ আবদুল করিমের জন্ম এক দিনমজুর পরিবারে। পিতা ইব্রাহীম আলী মা নাইওরজান বিবি। জন্মের পর থেকে অভাবের মধ্যেই তিনি বেড়ে উঠেন। অভাবের কারণে শিক্ষা লাভের সুযোগ আসেনি তাঁর জীবনে। তাই গ্রামের মোড়লের বাড়িতে গরু রাখালের চাকরী নিলেন তিনি। সাড়া দিন মাঠে গরু চরাতেন আর গান গাইতেন। এ গানই রাখাল বালককে বাউল সম্রাটে পরিণত করেছে।

 

Manual6 Ad Code

১৯৫৪ সারে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে মৌলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে বৃহত্তর সিলেটে গণসংযোগে আসতেন তখন তাদের সফরসঙ্গী হতেন বাউল করিম।

 

১৯৬৭ সালে শেখ মুজিব পাকিস্তানের দুর্নীতি দমন মন্ত্রী থাকা অবস্থায় সুনামগঞ্জে প্রথম সরকারী সফরে আসেন। কোন এক কারণে সেদিন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী মাহমুদ আলীর অনেকে নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর জনসভা বর্জন করেছিলেন। তখন শাহ আবদুল করিম জনসভাস্থলে এসে গান ধরেন তখন জনসভাস্থল লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে।

Manual4 Ad Code

 

১৯৭০ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবের ভাটি অঞ্চল নির্বাচনী প্রচারাভিযানে যোগ দেন করিম। ১৯৮৬ সালে শেখ হাসিনা যখন এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারাভিযান চালাতে ভাটি অঞ্চলে আসেন তখনও তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন শাহ আবদুল করিম।

 

Manual5 Ad Code

শাহ আবদুল করিমের গানের বিভিন্ন বই প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৪৮ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় আফতাব সঙ্গীত, ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত হয় গণসংগীত, ১৯৮১ সালে কালনীর ঢেউ, ১৯৯০ সালে ধলমেলা, ১৯৯৮ সালে ভাটির চিঠি, ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয় শাহ আবদুল করিম রচনা সমগ্র।

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code