সর্বশেষ

কানাইঘাটে ভয়াবহ বন্যা, ডুবছে বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট, যোগাযোগ বিচ্ছিহ্ন, পানিবন্দী লক্ষাধিক মানুষ

প্রকাশিত: ১৪. মে. ২০২২ | শনিবার

Manual1 Ad Code

কানাইঘাট প্রতিনিধি : টানা ভারি বর্ষন ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে লোভা-সুরমা নদীর পানি বাড়তে থাকে। সুরমা নদীর প্রবল ঢলে উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের কুওরঘড়ি সুরমা ডাইকে ভয়াবহ ভাঙ্গন সহ সুরমা ডাইকের বিভিন্ন এলাকার উপর দিয়ে বানের পানি প্রবাহিত হওয়ার কারনে উপজেলার ২নং লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম, ৫নং বড়চতুল, ১নং লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব, ৪নং সাতবাঁক, ৬নং কানাইঘাট সদর, ৩নং দিঘীরপাড় পূর্ব ও ৭নং দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের বিস্তৃর্ন এলাকা, রাস্তা-ঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার কারনে হাজার হাজার বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।
কানাইঘাট বাজার কোমর পানি থেকে হাটু পানি বিরাজ করায় বাজারের অধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে মালামারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কানাইঘাট-চতুল-দরবস্ত সড়ক, কানাইঘাট-গাছবাড়ী গাজী বোরহান উদ্দিন সড়ক, কানাইঘাট-সুরইঘাট সড়ক ও কানাইঘাট-শাহবাগ-জকিগঞ্জ সড়কের বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সিলেট শহরের সাথে সব ধরনের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিহ্ন রয়েছে।
উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। কানাইঘাট সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ১৪২ সে. মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেওয়ায় শত শত হেক্টর বুরো ধানের মাঠ তলিয়ে গেছে। আমন ধানের বীজতলা বিনষ্ট হয়েছে। শত শত মৎস্য খামার, ফিশারি-পুকুর বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। শত শত গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট কোমর পানি থেকে গলা পানি বিরাজ করায় লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে কাঁচা বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অনেক প্রবীণ মুরব্বীরা বলেছেন ২০০৪ সালের পর এত বড় বন্যা কানাইঘাটে আর দেখা যায় নি বলে তারা জানান। কুওরঘড়ির সুরমা ডাইকে ভয়াবহ ভাঙ্গনের কারনে লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়ন, পৌরসভা, বড়চতুল ইউনিয়ন ও সদর ইউনিয়ন বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন্ত ব্যানার্জি সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং সহ নদী ভাঙ্গন এলাকা সহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বন্যা কবলিত এলাকা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পরিদর্শন করছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সুরমা ডাইকের বিভিন্ন ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বিশেষ করে কুওরঘড়ি সুরমা ডাইকের ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ শুরু করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রভাষক আফসর উদ্দিন চৌধুরী ও লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান মাও. জামাল উদ্দিন তাদের ইউনিয়নের বন্যা কবলিত প্রত্যেকটি এলাকা পরিদর্শন করে হাজার হাজার পানিবন্দী মানুষজনকে দ্রুত ত্রাণ সামগ্রী ও শুকনো খাবার বিতরণের দাবী জানান এবং সরকারি ভাবে আরো বরাদ্দ দেওয়ার আহ্বান করেন। পানি বন্দী হয়ে পড়া অনেকে উপজেলার বিভিন্ন বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
নির্বাহী সুমন্ত ব্যানার্জি জানান, কানাইঘাটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি উপজেলা প্রশাসন থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সরকারি ভাবে বন্যা কবলিত এলাকার জন্য ১৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। আজ থেকে তা বিতরণের প্রস্তুতি নেয়া হবে এবং শুকনো খাবারের চাহিদা জানানো হয়েছে।

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code