শিক্ষাঙ্গন সন্ত্রাস মুক্ত করা সময়ের দাবী

প্রকাশিত: ১১. নভেম্বর. ২০১৬ | শুক্রবার


Manual7 Ad Code
  • জাহাঙ্গীর আলম: সিলেটে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে তারা নিজেদের মধ্যে একের পর এক সংঘাত-সংঘর্ঘে জড়াচ্ছে। ছাত্রলীগ ক্যাডারদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন। কারণ প্রতিনিয়ত সিলেটের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছাত্রলীগ ক্যাডাররা প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। বিশেষ করে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মদন মোহন কলেজ, এমসি কলেজ, সিলেট সরকারী কলেজ ও সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা এমন কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

কোনোভাবেই যেনো সামাল দেয়া যাচ্ছে না দেশের প্রাচীন সংগঠন ছাত্রলীগকে। তারা এতটাই বেপরোয়া যে, কারো কথাই তোয়াক্কা করছে না, কোনো পদক্ষেপেই তারা নিয়ন্ত্রণে আসছে না। মূল সংগঠন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীই তাদের ওপর ক্ষুব্ধ। স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন ওঠে বেপরোয়া ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণ করবে কে? এদের কি কোনো অভিভাবক নেই। তাদের কাছে কি জিম্মি হয়ে থাকবে এ দেশের শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ? শিক্ষাঙ্গন কি সন্ত্রাসমুক্ত হবে না?
এর সমাধান কোন পথে?

Manual4 Ad Code

এদিকে, সিলেট ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, আধিপত্য বিস্তার ও ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে গত কয়েক মাসে সিলেটে ছাত্রলীগের দুইকর্মী প্রাণ হারিয়েছে। রক্তাক্ত জখম হয়েছে অর্ধশত। অপকর্মের প্রতিবাদ করলে তাদের হাতে নাজেহাল হতে হচ্ছে শিক্ষকদেরও। সর্বশেষ গত সোমবার সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মদন মোহন কলেজে তান্ডব চালায় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম তুষার ও মহানগর শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমরুল হাসান গ্রুপের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়। এতে দুইজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৯৫ রাউন্ড গুলি ছুড়ে। কলেজে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ছাত্রলীগের এমন তান্ডবে ক্যাম্পাস জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর আগের দিন এমরুল গ্রুপের কর্মী বিকাশ সাহাকে মারধর করে তুষার গ্রুপের ক্যাডাররা। ভর্তি বাণিজ্য, ইভটিজিং,ক্যাম্পাসে অস্ত্রের মহড়া, জোরপূর্বক দলে অন্তর্ভুক্তসহ অভিযোগের পাহাড় ছাত্রলীগ নেতা তুষারের বিরুদ্ধে। তুষারের কর্মীদের দ্বারা মদন মোহন কলেজের অনেক ছাত্রী ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন। অনেকেই মানসম্মানের ভয়ে মুখ খোলেন না আবার অনেকে মুখ খুললে তাদের উপর নেমে আসে নির্যাতন।

শুধু তাই নয়, গত ২৯ অক্টোবর রেজিস্ট্রেশন ও টিউশন ফি ছাড়া পরীক্ষা এবং হলে নকলের সুযোগ না দেয়ায় মদন মোহন কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে অবস্থান নিয়ে তারা পরীক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেয়। ছাত্রলীগের বাধার কারণে নির্ধারিত সময়ের একঘণ্টা পর পরীক্ষা নিতে হয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। এর আগে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মারধর, হত্যা ও গুমের হুমকির অভিযোগ রয়েছে ছাত্রলীগের তুষার গ্রুপের বিরুদ্ধে। তুষার গ্রুপের উপগ্রুপে রয়েছেন কানাইঘাটের সাব্বির, রাজেষ ও সুমন।

অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে মদন মোহন কলেজে গত কয়েক মাসে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা একাধিকবার সংঘাত-সংঘর্ষে জড়িয়েছে। সকল অপকর্মের
পৃষ্ঠপোষকতা করেন মহানগর ছাত্রলীগ সেক্রেটারী আব্দুল আলিম তুষার। আর সাব্বির, রাজেষ, সুমন ক্যাম্পাসে চালান তান্ডব।
এদের কাছে যেন জিম্মি পুরো ক্যাম্পাস।

Manual8 Ad Code

সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতিই এর জন্য দায়ী। বেপরোয়া ছাত্রলীগের জন্য কেউ কেউ অবশ্য রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নকেই দায়ী করছেন।

Manual6 Ad Code

গডফাদারদের প্রশ্রয় এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই এই এ ঘটনাগুলো বারবার ঘটছে বলে মনে করছেন সিলেটের সুশাসনের জন্য নাগরিকের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী।

আর ছাত্র সংগঠনগুলোর এমন কর্মকাণ্ডের পিছনে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নকেই দায়ী করছেন অনেকেই। জেলা বারের সাবেক সভাপতি ই.ইউ এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম জানান, যতদিন রাজনৈতিকভাবে এসব নির্মূল করা না যাবে ততদিন এমন কর্মকাণ্ড চলতেই থাকবে।

Manual6 Ad Code

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code