সর্বশেষ

» ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গঠনে ডিসিদের ২৪ নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ১৮. জানুয়ারি. ২০২২ | মঙ্গলবার

চেম্বার ডেস্ক:: ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গঠনে জেলা প্রশাসকদের ২৪ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২২-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব নির্দেশনা দেন। গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন সরকার প্রধান।

জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকদের সক্রিয় ভূমিকা অব্যাহত রাখতে হবে। সরকারি সেবা নিতে এসে সাধারণ মানুষ যেন কোনোভাবে হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।’

 

মানুষের কল্যাণে ভয়-ভীতি, প্রলোভনের ঊর্ধ্বে থেকে আইনানুগ দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়ন করেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৪১ বাস্তবায়ন করা।’

‘বাংলাদেশের জেলা প্রশাসন, মানুষের পাশে সর্বক্ষণ’ শীর্ষক এই সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২৪ দফা নির্দেশনা:
১. করোনা ভাইরাসজনিত সংকট মোকাবিলায় সরকার সময়ে সময়ে জারি করা নির্দেশনা মাঠপর্যায়ে প্রতিপালন নিশ্চিত করতে হবে। 

২. জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে গৃহীত উন্নয়ন ও সেবামূলক কার্যক্রমগুলো যথাযথ বাস্তবায়ন এবং এর ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে হবে। 

৩. খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। 

৪. সরকারি অফিসে সাধারণ মানুষ যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বিঘ্নে যথাযথ সেবা পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সেবাপ্রত্যাশীদের সন্তুষ্টি অর্জনই যেন হয় সরকারি কর্মচারীদের ব্রত। 

৫. এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) স্থানীয়করণের আওতায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনে তৎপরতা জোরদার করতে হবে। 

৬. গৃহহীনদের জন্য গৃহনির্মাণ, ভূমিহীনদের কৃষি খাসজমি বন্দোবস্তসহ সকল সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে যেন প্রকৃত অসহায়, দুস্থ ও সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ সুযোগ পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। 

৭. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রমের মানোন্নয়নে উদ্যোগী হতে হবে। কোভিড পরিস্থিতিতে বিকল্প ব্যবস্থায় অনলাইনে বা ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে পাঠদান কার্যক্রম যেন অব্যাহত থাকে সে ব্যবস্থা নিতে হবে। অপেক্ষাকৃত দুর্গম এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। 

৮. কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলো যেন কার্যকর থাকে তা প্রতিনিয়ত তত্ত্বাবধান করতে হবে এবং নানাবিধ কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে হবে।

৯. শিশু-কিশোরদের শারীরিক-মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে তাদের জন্য প্রত্যেক এলাকায় সৃজনশীলতার চর্চা, সাংস্কৃতিক কর্মকা- ও ক্রীড়া সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। 

১০. নাগরিকদের সুস্থ জীবনাচারের জন্য জেলা ও উপজেলায় পার্ক, খেলার মাঠ প্রভৃতির সংরক্ষণ এবং নতুন পার্ক ও খেলার মাঠ তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। 

১১. পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে সংগতি রেখে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে উচ্চ প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তুলতে কাজ করতে হবে। 

১২. জনসাধারণের মাঝে তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতকরণে কাজ করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার, গুজব ইত্যাদি রোধে উদ্যোগ নিতে হবে। 

১৩. বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি ও অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যকে অক্ষুন্ন রাখার লক্ষ্যে ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। 

১৪. মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রাখতে হবে। মাদকবিরোধী অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করতে হবে। 

১৫. নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, নিপীড়ন ও বৈষম্যমূলক আচরণ বন্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং, খাদ্যে ভেজাল, নকল পণ্য তৈরি ইত্যাদি অপরাধ রোধে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে। 

১৬. বাজারে পণ্যের সরবরাহ মসৃণ রাখতে, কৃত্রিম সংকট রোধ ও পণ্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।

১৭. সরকারি জমি, নদী, বনভূমি, পাহাড়, প্রাকৃতিক জলাশয় প্রভৃতি রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্যে নতুন সরকারি প্রতিষ্ঠান স্থাপনে ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণকে প্রাধান্য দিতে হবে; পরিকল্পিত নগরায়ন ও বনায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

১৮. পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নতুন নতুন পর্যটন স্পট গড়ে তুলতে হবে। 

১৯. জেলার নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষা এবং জেলাভিত্তিক বিখ্যাত পণ্যসমূহের প্রচার ও বিপণনে উদ্যোগী হতে হবে। 

২০. জেলার সকল সরকারি দপ্তরের কার্যক্রমসমূহ যথাযথভাবে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছাতে আপনাদের ব্রতী হতে হবে। 

২১. জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত প্রতিনিধি অর্থাৎ সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে হবে। এবং উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে কি-না বা বাস্তবায়নও যথযাথভাবে হচ্ছে কি-না সেগুলো সমন্বয় করতে হবে। উন্নয়ন প্রকল্প যত্রতত্র যেন না হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। 

২২. সমাজের অনগ্রসর শ্রেণি বেদে, জেলে, কৃষক, হিজড়া (ট্রান্সজেন্ডার) ও হরিজন ও পরিচ্ছন্নকর্মীসহ যারা একেবারে সমাজের অনগ্রসর শ্রেণি তাদের সার্বিক উন্নয়ন, তাদের বাসস্থান এবং তাদের সুযোগ ‍সুবিধা সৃষ্টি করতে হবে। 

২৩. মুক্তিযুদ্ধের যেসব অঞ্চলে গণহত্যার শিকার পরিবারদের বর্তমান অবস্থা জানা ও তাদের যথাযথ সম্মানজনক জীবনযাত্রার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। 

২৪. গণকবর সংরক্ষণ ও যেসব যুদ্ধক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। ইতিহাস জনসমক্ষে তুলে ধরতে হবে।

image_print
           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

July 2024
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031