সর্বশেষ

» নুর-রাশেদ ‘অবাঞ্ছিত’, ছাত্র অধিকার পরিষদের নতুন আহ্বায়ক কমিটি!

প্রকাশিত: ১৫. অক্টোবর. ২০২০ | বৃহস্পতিবার

Manual2 Ad Code

চেম্বার ডেস্ক:: ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে একই সংগঠনের ২২ সদস্যের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই ঘোষণা দেন। আগের ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ নামেই তারা নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন।

Manual1 Ad Code

 

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং নতুন কমিটির আহ্বায়ক এ পি এম সুহেল বলেন, ‘মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে সরে গিয়ে মানুষের আবেগ ও বিশ্বাস নিয়ে নোংরা রাজনীতি, আর্থিক অস্বচ্ছতা, স্বেচ্ছাচারিতা, অগণতান্ত্রিকভাবে সংগঠন পরিচালনা, ত্যাগী ও দুঃসময়ের সহযোদ্ধাদের মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে অবমূল্যায়ন করা এবং সম্প্রতি ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণের মামলাকে কেন্দ্র করে নোংরা রাজনীতিকিকরণের অপচেষ্টার প্রতিবাদে ও সাংগঠনিক সংস্কারের উদ্দেশ্যে আজকের সংবাদ সম্মেলন।’

তিনি বলেন, ‘গত ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ তারিখে সংগঠনের তৃতীয় বর্ষে পদার্পণের অনুষ্ঠানে সংগঠনের নাম সংক্ষিপ্ত করা হয়, যার বিরোধিতা করেছিলাম আমরা অনেকেই। ডাকসু’র মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাড়াহুড়ো করে রাজনীতি করার অভিপ্রায়ে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ, শ্রমিক অধিকার পরিষদ ও প্রবাসী অধিকার পরিষদ নামে তিনটি অঙ্গ সংগঠন তৈরি করা হয় ছাত্র অধিকার পরিষদ এর উদ্যোগে। যেখানে এসব সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এখন পর্যন্ত অজানা আমাদের কাছে। এর ফলে সংগঠনের অভ্যন্তরে চাপা ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয় ও এর বিরোধিতা করেন সংগঠনের তৃণমূল থেকে শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ। কিন্তু একক সিদ্ধান্তে রাজনীতি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। যা একপ্রকার স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত এবং সেই সঙ্গে চরম বিরোধ সৃষ্টি করে সংগঠনের অভ্যন্তরে। বিভিন্ন কারণে তরুণদের রাজনীতি বিমুখতায় তারুণ্যনির্ভর এ দলের আত্মপ্রকাশ সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু গণমানুষের কথা বলে সাধারণ মানুষের আবেগকে পুঁজি করে, মুখের আড়ালে মুখোশ পরে আছে ভয়ঙ্কর কিছু সত্য, যা সংগঠনের প্রায় সবাই জানে, কিন্তু প্রকাশ করতে চায় না।’

কমিটির সদস্য সচিব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসমাইল সম্রাট বলেন, ‘এর ভয়াবহতা এতটাই প্রকট হয়েছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণের মামলাকে রাজনীতিকিকরণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকটিমকে নোংরাভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, যেখানে সংগঠনের ৮০ভাগ সহযোদ্ধা এই বিষয়ে জানে এবং সমাধানের প্রক্রিয়ায় অনেকেই অংশগ্রহণ করে। এই মামলাটা তখনই রাজনৈতিক মামলা হতো যদি সংগঠনের সবাই এটা অনেক আগে খেকে না জানতো।’

তিনি বলেন, ‘এপিএম সুহেলকে বহিস্কার ঢাবি সিন্ডিকেটের একক সিদ্ধান্ত ছিল। কেন্দ্রীয় কোনও সিদ্ধান্ত ছিল না। ঢাবি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে তখনই সবাই মিলে একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। সংগঠনের স্বার্থে এবং তাদের শোধরানোর সুযোগসহ নানাবিধ চিন্তা করে আমরা সব বিষয়ে এতদিন চুপ করে ছিলাম। তবে সম্প্রতি তাদের আর্থিক অস্বচ্ছতা, নারী কেলেঙ্কারি, সংগঠনের অভ্যন্তরীণ স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত, নীতিনৈতিকতাহীন আচরণ, তৃণমূলকে অবমূল্যায়ন, ত্যাগী ও পুরাতন নেতাদের সাময়িক বহিস্কার করাসহ নানাবিধ বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে কথা বলার জন্য আমরা উপস্থিত হয়ে বুকভরা দুঃখ এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ভয় থাকা সত্ত্বেও।’

Manual3 Ad Code

তিনি বলেন, ‘এদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ফোন কল, ম্যাসেজের মাধ্যমে নানাবিধ হুমকি ধামকি দেওয়া হয়। যা ইতোমধ্যে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গেও করা হয়েছে। এটা অনেকটা সরকারের বিরোধী মতকে দমিয়ে রাখার যে প্রবণতা তারই অন্য রূপ। এরা নিজেরাই অনলাইন নীতিমালা করে সংগঠনের নেতাকর্মীদের এক প্রকার মানসিকভাবে অত্যাচার করে যাচ্ছে দিনরাত।‘

Manual1 Ad Code

ইসমাইল সম্রাট আরও বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য ছিল বৈষম্যমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে মিলেমিশে কাঁধে কাঁধ রেখে একসঙ্গে পথ চলা, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে ভালো। কিন্তু সে আদর্শ থেকে তারা আজ যোজন যোজন দূরত্বে সরে গেছে। বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে স্লোগান নিয়ে আমরা আমাদের সাংগঠনিক যাত্রা শুরু করেছিলাম। সেই সংগঠনে নিজেরাই বারবার যারা রাজনীতির নামে হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে চায় তাদের মাধ্যমে অন্যায়ের শিকার হচ্ছি। গুটিকয়েক নেতার অহমিকা, অহঙ্কার, একরোখা সিদ্ধান্তের কারণে সাংগঠনিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে আমাদের হাজারো মানুষের ত্যাগের বিনিময়ে গড়ে ওঠা সংগঠন। এরই ফলশ্রুতিতে একে একে বিভিন্ন কেলেঙ্কারি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে যা আমাদের জন্য খুবই লজ্জাস্কর এবং দুঃখজনক।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কখনোই এমন সংগঠন চাইনি। এদের অসাংগঠনিক মনোভাবের বিরুদ্ধে কথা বললে শিবির, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, বাম, গোয়েন্দাদের এজেন্টসহ অন্যান্য ট্যাগ দেওয়া, মানসিক রোগী বানিয়ে দেওয়া, সাময়িক অব্যাহতির নামে হেনস্থা করাসহ মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে দেয় এরা। যেহেতু মানুষ এদের অন্ধভাবে বিশ্বাস করে, এরা এটাকেই নোংরাভাবে ব্যবহার করে। নতুন কমিটি তৈরি করার ক্ষেত্রে সদ্য আসা নতুন সদস্যদের উল্টাপাল্টা বুঝিয়ে পুরাতনদের অবমূল্যায়ন করা তাদের কাছে খুব স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

তিনি জানান, বিষাক্ত পরিস্থিতি সহ্য করতে না পেরে অনেকেই সংগঠন ত্যাগ করেছে, কিংবা ভ্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন ইউনিটের চাপা ক্ষোভ ছিল। যার ফলে সংগঠনের ভেতরে ২১টি ইউনিট বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।

সম্রাট বলেন, ”এমতাবস্থায় সবকিছু বিবেচনা করে নুর, রাশেদদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে আমাদের আগের নাম ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ এর মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে চলমান সব অনিয়ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে একটি বৈষম্যমুক্ত সুখি সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়তে এবং সারা বাংলাদেশের ছাত্র সমাজকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করলাম।’

উল্লেখ্য, হাসান আল মামুন ও নুরুল হক নূরসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর দায়ের করা তিনটি মামলায় আসামি করা হয়েছে নুরকে।

গত ২০ সেপ্টেম্বর এই শিক্ষার্থী রাজধানীর লালবাগ থানায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনকে প্রধান আসামি করে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ আরও পাঁচ জনকে সহযোগিতার অভিযোগে আসামি করা হয়।

 

Manual8 Ad Code

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code