১৩ বছর বয়সে ৮৭ দিনে কোরআনের হাফেজা হলো সুমাইয়া

প্রকাশিত: ১০. নভেম্বর. ২০২৩ | শুক্রবার

Manual4 Ad Code

চেম্বার ডেস্ক: মাত্র ৮৭ দিনে পবিত্র কোরআনের ৩০ পারা মুখস্ত করে হাফেজা হলো সুমাইয়া খাতুন (১৩)। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চরঘোষপুর গ্রামে। সে পাবনার দারসে জামী ন্যাশনাল একাডেমী মাদ্রাসার ছাত্রী। তার এই অর্জনে খুশি বাবা-মা ও শিক্ষক-সহপাঠীরা। ভবিষ্যতে একজন দ্বীনদার আলেম ও মুহাদ্দিস হওয়ার ইচ্ছা সুমাইয়ার।

Manual8 Ad Code

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের চরঘোষপুর গ্রামের কৃষক উজ্জল হোসেন ও শামসুন্নাহার দম্পতির সন্তান সুমাইয়া খাতুন। তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সবার বড় সে। ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী সুমাইয়ার স্বপ্ন ছিল পবিত্র কোরআনের হাফেজা হওয়ার।

সুমাইয়া খাতুনের মা শামসুন্নাহার জানান, মেয়েকে চার বছর বয়স থেকে লেখাপড়া শুরু করানো হয়। সে খুব মেধাবী। চরঘোষপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক সমাপনীতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় সে। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় স্কুল থেকে ভর্তি হয় পাবনার রাধানগরের মাদানিয়া মাদ্রাসায়। এরপর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাইতুন নুর আদর্শ মহিলা মাদ্রাসায় ভর্তি হয় সুমাইয়া। সেখানে কিছু দিন পাঠগ্রহণ শেষে দূরবর্তী হওয়ায় আবার সে ভর্তি হয় পাবনার উম্মে হাবিবা মাদ্রাসায়।

সর্বশেষ কোরআন হেফজ করতে ভর্তি হয় দারসে জামী ন্যাশনাল একাডেমী মাদ্রাসায়। প্রখর মেধার অধিকারী সুমাইয়া অল্প দিনেই আয়ত্ব করে পবিত্র কোরআন। মাত্র ৮৭ দিনে সে পবিত্র কোরআনের ৩০ পারা মুখস্ত করে হাফেজা হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করে। একইসঙ্গে সে পাবনার খোদাইপুর মদিনাতুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।

Manual3 Ad Code

সুমাইয়া খাতুন বলে, ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল হাফেজা হওয়ার। তাই বিভিন্ন মাদ্রাসায় ভর্তি হলেও সাহস পাচ্ছিলাম না। ভয় কাজ করতো পারবো কি না। তবে নিজের মেধা, অধ্যাবসায় আর শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় অবশেষে হাফেজা হতে পেরে আমি খুব খুশি। আমার বাবা-মা ও শিক্ষকদের অবদান রয়েছে। সবাই দোয়া করবেন যেন ভবিষ্যতে বড় আলেম ও মুহাদ্দিস হয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারি।

সুমাইয়ার বাবা উজ্জল হোসেন বলেন, আজ আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। মেয়েটার ইচ্ছা আল্লাহ পূরণ করেছেন। এজন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। মেয়েটাকে ভালো কিছু দিতে পারিনি, খুব কষ্ট করেছে সে। দোয়া করি সে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাক।

দারসে জামী ন্যাশনাল একাডেমীর শিক্ষিকা হাফেজা ফাতেমা জান্নাত তমা বলেন, সুমাইয়া পড়াশোনায় খুব ভালো। আদব-কায়দায়ও ভালো সে। আমরা চেষ্টা করেছি তাকে সঠিকভাবে গাইড লাইন দিতে। কিন্তু আসল কাজটি করেছে সুমাইয়া। অনেক পরিশ্রম করেছে সে। এজন্য তাকে সাধুবাদ জানাই। অল্প সময়ে পবিত্র কোরআন মুখস্ত করেছে সে।

Manual2 Ad Code

মাদ্রাসাটির হেফজখানার প্রধান হাফেজ আলী হাসান ইয়াসা বলেন, আল কোরআনের মুজেজার অন্যতম দৃষ্টান্ত সুমাইয়া। সবাই হাফেজ হতে পারে না। আল্লাহ সবাইকে হাফেজ হিসেবে কবুল করেন না। কোরআনের সাথে সম্পর্কের কারণে আল্লাহ যে কোনো বস্তুকে দামি করে দিতে পারেন। সুমাইয়ার বাবা-মাকেও আল্লাহ সম্মান দিয়েছেন। এটি আল্লাহর নেয়ামত।

দারসে জামী ন্যাশনাল একাডেমীর পরিচালক হাফেজ আবু তালহা বলেন বলেন, মাদ্রাসায় ভর্তির পর থেকে প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছে সুমাইয়া। শিক্ষকদের দেওয়া নিয়ম-কানুন সব সময় মেনে চলেছে সে। যার ফলে এমন বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেছে। দেশ ও দ্বীনের কল্যাণে সে যেন কাজ করতে পারে সেই দোয়া করি।

জামিয়া আশরাফিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি নাজমুল হাসান বলেন, আল্লাহ প্রদত্ত বিরল প্রতিভা হলো সুমাইয়া। আল্লাহ তাকে সম্মানিত করেছে। সবাই এই সুযোগ পায় না। তাকে দেখে অন্য মেয়েরা অনুপ্রাণিত হবে বলে আশা করি। কোরআনের সাথে যিনি থাকবেন, তার সম্মান বাড়িয়ে দেবেন আল্লাহ।

Manual2 Ad Code

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানায়, মাত্র ১৩ বছর বয়সে ৮৭ দিনে একজন মেয়ের কোরআনের হাফেজ হওয়ার নজির খুব একটা নেই বাংলাদেশে। সুমাইয়ার এই কৃতিত্ব অর্জনে বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে মাদ্রাসায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code