সর্বশেষ

গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেলে আলসারের ঝুঁকি ৪৫ শতাংশ: বিএসএমএমইউ ভিসি

প্রকাশিত: ২২. মে. ২০২২ | রবিবার


Manual5 Ad Code

চেম্বার ডেস্ক:: মাত্রাতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেলে ৪৫ শতাংশ গ্যাস্ট্রিক আলসার হয় বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তাই যত্রতত্র গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ ব্যবহার কমাতে নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান উপাচার্য।

Manual7 Ad Code

রোববার (২২ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লকের মিলনায়তনে ‘ওভারিইউজ অব পিপিআই: আ রিভিউ অব ইমার্জিং কনসার্ন’ শীর্ষক সেন্ট্রাল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, প্রোটন-পাম্প ইনহিবিটর (পিপিআই) হচ্ছে এমন ধরনের ওষুধ, যার প্রধান কাজ হলো- পাকস্থলীর প্যারাইটাল কোষ থেকে এসিড নিঃসরণ কমানো। এই পিপিআই বা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ মাত্রাতিরিক্ত খাবার ফলে ৪৫ শতাংশ গ্যাস্ট্রিক আলসার হয়। মাইক্রো নিউক্রিয়েন্ট যেগুলো লস হচ্ছে। যার ফলে দেহের ফ্রাকচার হয়। ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন-১২, আয়রন এই পিপিআই ব্যবহারের ফলে ডিফিসিয়েন্ট হচ্ছে। তাই বলে এ সব রোগের ভয়ে হঠাৎ করে পিপিআই বন্ধ করা যাবে না। পিপিআই ক্রমে দুই সপ্তাহ, এক সপ্তাহ করে কমিয়ে দিতে হবে। দিনে একটি, দুদিন পরে আরেকটি করে ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। আমরা যদি শৃঙ্খলভাবে চলাফেরা করি তাতেও এসিডিটি হবে না। এসিডিটি না হলে ওষুধ খাওয়া লাগবে না। ওষুধ খাওয়া হলে আরেকটি রোগ তৈরি হয়। একটি রোগের জন্য ওষুধ খেলে আরেকটি রোগের সৃষ্টি হতে পারে।

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা দেখছি বাংলাদেশের মানুষ রাস্তাঘাটে পণ্যের মতো ওষুধ কিনে থাকে। অনেকে আবার ফার্মেসিতে গিয়ে দামি ওষুধ কিনে থাকেন। এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের ফলে আমরা এন্টিবায়োটিক খেয়ে যে অবস্থায় রয়েছি তাতে দেশে ২০৫০ সালের মধ্যে এন্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে করোনাভাইরাসের চেয়ে বেশি লোক মারা যাবে। আমাদের অনেকে যখন তখন স্টেরয়েড কিনে খাই। স্টেরয়েড খেয়ে মোটাতাজা হই। কিন্তু তার ভবিষ্যৎ খারাপ।

Manual5 Ad Code

এ সময় করোনাভাইরাসের প্রকোপের সময়ের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও আহ্বান জানান বিএসএমএমইউ উপাচার্য। পাশাপাশি তিনি মাঙ্কি পক্স নিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতেও বলেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রাজীবুল আলম বলেন, গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের বড় অংশ ওষুধ বিক্রি হচ্ছে ব্যবস্থাপনাপত্র ছাড়া। রোগীর একটু পাতলা পায়খানা, মাথাব্যথা, পিঠে ব্যথাসহ  নানা জটিলতা দেখা দিলে ফার্মেসি দোকানিরা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দিচ্ছেন। এই ক্ষেত্রেই একটু পানি পান করালে বা হালকা কিছু ওষুধ ব্যবহার করলে এই সমস্যা সমাধান করা যেত। দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবস্থাপনাপত্র ও চিকিৎসকের পরামর্শ  ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনের কারণে শরীরে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিচ্ছে। গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনের কারণে গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার, স্মৃতিভ্রমের মতো ঘটনা ঘটতে পারে এমনকি ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম কমে আসতে পারে।

 

Manual7 Ad Code

তিনি বলেন, রোগীর প্রয়োজন পড়লে অবশ্যই এ ধরনের ওষুধ ব্যবস্থাপনা লিখতে হবে, কিন্তু অপ্রয়োজনীয় অতিমাত্রায় এর ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। যত্রতত্র এবং অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ ব্যবহার কমাতে নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান এই বিশেষজ্ঞ। বলেন, চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বিক্রি বন্ধ করতে হবে।

 

তিনি আরও বলেন, ইউএস ও ইউকেতে যখন ইচ্ছা তখন ওষুধ বিক্রি এবং কেনা সম্ভব নয়। বছরে তিনবার গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ কিনতে পারবেন। চাইলেই আপনি বেশি কিনতে পারবেন না। কারণ ওখানে সবকিছু রেকর্ড থাকে। আর এর বিল পরিশোধ করে কোনো বেসরকারি বিমা প্রতিষ্ঠান। যদি আমাদের দেশে স্বাস্থ্যবীমা থাকতো, ওষুধ বিক্রি ও কেনা এবং তদারকি করা সম্ভব হতো তাহলে এই অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বিক্রি ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো।

 

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্যাস্ট্রোএন্টারলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রাজিবুল আলম ও ফার্মাকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শরবিন্দু কান্তি সিনহা।

Manual5 Ad Code

নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ সবুজের সঞ্চালনায় প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররাফ হোসেন, উপউপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন ও ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

November 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code