সর্বশেষ

» পাচার করা টাকা দেশে আনার উদ্যোগ অনৈতিক : সিপিডি

প্রকাশিত: ১০. জুন. ২০২২ | শুক্রবার


Manual7 Ad Code

চেম্বার ডেস্ক:: প্রস্তাবিত বাজেটে পাচার করা টাকা দেশে আনার যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তা নৈতিকতা পরিপন্থি বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।

আজ শুক্রবার রাজধানীর লেক শোর হোটেলে জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ পর্যালোচনা তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বৈদেশিক মুদ্রা বাড়াতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেওয়া হয়।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার (৯ জুন) নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে ৭ শতাংশ কর দিয়েই এসব অর্থ বৈধ করার সুযোগ দেওয়ার কথা জানান। তবে এই উদ্যোগের ফলে বিদেশ থেকে কোনো টাকাই ফেরত আসবে না বলে জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি।

Manual6 Ad Code

এ বিষয়ে ফাহমিদা খাতুন বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ নৈতিকতা পরিপন্থী। যারা সৎ করদাতা তাদের নিরুৎসাহিত করা, নৈতিকভাবে তাদের ডিমোরালাইজড (নীতিভ্রষ্ট) করার একটা প্রচেষ্টা। অন্যদিকে, যারা অবৈধ উপায়ে অর্থ-সম্পদ বাইরে নিয়ে যায়, তাদের কিন্তু প্রকারান্তরে উৎসাহিত করা হয়েছে।

Manual4 Ad Code

এদিকে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি রয়েছে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। এ অবস্থায় প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। আগামী এক বছরে মূল্যস্ফীতি কীভাবে কমবে? কারণ, পৃথিবীর অনেক দেশ অর্থনৈতিক মন্দায় চলে যাবে। তাহলে কীভাবে মূল্যস্ফীতি কমবে, এটাই বড় প্রশ্ন।

তিনি বলেন, বর্তমানে জনজীবনের ওপর চাপ রয়েছে। বাজেটে প্রত্যাশা ছিল নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষকে স্বস্তি দেওয়া হবে, কিন্তু দেওয়া হয়নি। উল্টো বিত্তবানদের কর কমানো হয়েছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট যে লক্ষ্য নিয়ে প্রণয়ন করা হয়েছে তা পূরণে নেওয়া পদক্ষেপগুলো পরিপূর্ণ নয়। নীতিকৌশলের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ অসম্পূর্ণ এবং বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তা অপর্যাপ্ত।

সিপিডি বলছে, মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক অর্থনীতির নানা চাপ রয়েছে। চাপ মোকাবিলায় ৬টি লক্ষ্যের কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। যার মধ্যে রয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বর্ধিত ভর্তুকির জন্য অর্থায়নের সংস্থান, বৈদেশিক অর্থের ব্যবহার নিশ্চিত করা, টাকার বিনিময় মূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং রিজার্ভ সন্তোষজনক রাখা।

Manual6 Ad Code

ড. ফাহমিদা বলেন, আমরা দেখেছি বাজেটে মূল্যস্ফীতি কথাটি অনেকবার এলেও এটি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর পদক্ষেপ পর্যাপ্ত নয়। কর কাঠামোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে কর প্রত্যাহারের প্রস্তাবনা যথেষ্ট নয়। অনেক পণ্যেই কর রয়ে গেছে। বাজেটে গম ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যে করছাড় নেই। মূল্যস্ফীতির এ সময়ে করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধি করা হয়নি, ভর্তুকি ও সামাজিক সুরক্ষার আওতা ওই অর্থে বাড়েনি।

তিনি বলেন, বিদেশ থেকে অর্থ আনার বিষয়টি সম্পূর্ণ অনৈতিক। আর একটি বিষয় হচ্ছে, এটা কখনই বাস্তবায়নযোগ্য নয়। তার চেয়ে বড় কথা হলো, এটা অনৈতিক। একদিকে অর্থপাচারের সুযোগ দিয়ে আবার অর্থ ফিরিয়ে আনার সুযোগ করে দেব; অন্যদিকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য করছাড় থাকবে না। সেটা সামাজিক ন্যায় বিচারের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার বর্তমান সরকারের ২২তম এবং বাংলাদেশের ৫১তম বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ প্রতিপাদ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে রাখার কথা বলা হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। নতুন বাজেটে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা চার লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি দুই লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।

আয়ের লক্ষ্যমাত্রা চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি। কর বাবদ তিন লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে আগের বছরের তুলনায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে সরকার।

এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

Manual3 Ad Code

           

সর্বশেষ

আর্কাইভ

December 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031  
Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code