সিলেট নগরীর ফুটওভার ব্রিজগুলো মাদকসেবীদের দখলে!

  • সাইফুল আলম: কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সিলেট নগরের ফুটওভার ব্রিজগুলো ব্যবহার করছেন না পথচারীরা। তাই অনেকটা অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। আর এই সুযোগে অপরাধীরা দখলে নিয়েছে ফুট ওভারব্রিজগুলো। সন্ধ্যা নামতেই ব্রিজগুলোর চিত্র পাল্টে যায়। বৈদ্যুতিক বাতি না থাকায় রাতে ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকারে পরিস্থিতি আরো ভয়ানক হয়ে ওঠে। চলে মাদক সেবন, কেনা-বেচা ও পতিতাদের অনৈতিক আড্ডা। আছে ভবঘুরে মানুষ ও ছিনতাইকারীদের উৎপাত। এছাড়া ব্রিজের উপর জমে থাকা ময়লার স্তুপ থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।

নগরের ফুট ওভারব্রিজগুলোতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারি না থাকায় কার্যত এগুলো অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন অফিসের ব্যানার পোস্টারে ঢেকে আছে ওভারব্রিজগুলো। ফলে এসব পোস্টার ব্যানারের আড়ালে চলে নানা অপরাধ। পতিতারাও এখানে দলবেঁধে অবস্থান নেয়। ছিনতাইকারী ও পতিতাদের ভয়ে ওভারব্রিজ ব্যবহার করতে সাহস পান না। ফুট ওভারব্রিজের কাছাকাছি থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বন্দরবাজারস্থ কোর্টপয়েন্টে ফুট ওভারব্রিজটি পথচারী চলাচল না থাকায় সারাদিন ব্রিজটিতে কিছু মানুষ শুয়ে থাকে। আর দিনের বেশিরভাগ সময়ই মাদকসেবীদের আনাগোনা।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় বন্দরবাজার কোর্টপয়েন্টের ওভারব্রিজের উপরে ও নিচে অন্তত ১০ মাদকাসক্ত অবস্থান করতে দেখা যায়। ওভারব্রিজের সিঁড়ি ও উপরে বসেই মাদক সেবন করছে তারা। এর অদূরেই পুলিশ ফাঁড়ি। ফাঁড়ির ভিতরে ও বাইরে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে অলসভাবে বসে থাকতে দেখা গেছে। পাশেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনীতে জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও আদালত। সন্ধ্যা হলেই ওভারব্রিজটি অপরাধীদের দখলে থাকে। পুলিশ দেখেও না দেখার ভান করে।
কোর্টপয়েন্টের এক ব্যবসায়ী বলেন, ফুট ওভারব্রিজটি সারাদিনই খালি থাকে। প্রায়ই ব্রিজটিতে কিছু মানুষকে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। আর মানুষ চলাচল কম থাকায় মাদকসেবীরা এখানে নিরাপদে মাদক সেবন করে। রাতের বেলা বখাটে ও মাদকসেবীদের আড্ডা বসে।

রাত ১১টার দিকে দেখা যায় হুমায়ুন রশীদ চত্বরে ওভারব্রিজের ওপরে-নিচে শুয়ে বসে আছে ১৫/২০ জন মাদকাসক্ত ও ভবঘুরে। পাশেই পুলিশের চেকপোস্ট। নিচে কয়েকটি চায়ের দোকান। চায়ের দোকানির সাথে কথা বলে জানা যায়, সন্ধ্যা হলে ওভারব্রিজটি অপরাধীদের দখলে চলে যায়। ভয়ে কেউ ওভারব্রিজের ওপরে উঠেন না। একই অবস্থায় নগরের টিলাগড়ের ফুট ওভারব্রিজেও।

কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, রাতের বেলা টহল টিম থাকে এলাকায়। ফুট ওভারব্রিজ থেকে প্রায়ই মাদকসেবীসহ অপরাধীদের আটক করে আদালতে চালান করা হয়। পরবর্তীতে জামিন নিয়ে বের হয়ে এসে আবারো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।