সর্বশেষ

» কানাইঘাটে পঞ্চাশোর্ধ্ব নারীকে যৌন হয়রানি, ভিডিও ধারণ করে চাঁদা দাবি

প্রকাশিত: ১৪. সেপ্টেম্বর. ২০২১ | মঙ্গলবার

চেম্বার ডেস্ক:: সিলেটের কানাইঘাটে প্রবাসী পরিবারের এক নারী সদস্যকে একা পেয়ে নিজ বাড়িতে যৌন হয়রানি করেন কয়েকজন যুবক। একই সঙ্গে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন তারা। সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওই নারীর প্রবাসী দুই ছেলের কাছে চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু দাবি করা সব টাকা না পেয়ে নারীকে যৌন হয়রানির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন ওই যুবকরা।

ছড়িয়ে পড়া ৪ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, মধ্যরাতে ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দ। চার লোকের উপস্থিতি দেখা যায়। লোহার গ্রিলে ঘেরা বারান্দায় তারা এক নারীকে ঘিরে রেখে একটি কক্ষে প্রবেশ করেন। কখনো ওই নারীর শাড়ির আঁচল ধরে টানছিলেন, আবার হাত ধরে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে টানাহেঁচড়া করছিলেন। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে ওই নারী বারবার হাতজোড় করছিলেন। এরপর চারজনের সঙ্গে নারীর ধস্তাধস্তি ছাড়া আর কোনো কিছু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল না ভিডিওতে।

ভুক্তভোগী নারীর প্রতিবেশী ও তার এক আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৮ আগস্ট দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। যৌন হয়রানির শিকার ওই নারীর বয়স পঞ্চাশোর্ধ্ব। তার স্বামী নেই। চার মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছেন। মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। দুই ছেলে দুবাই প্রবাসী। বাড়িতে তিনি একাই থাকতেন।

২৯ আগস্ট ঘরে তালা দিয়ে হঠাৎ তিনি কাউকে কোনো কিছু না জানিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামে তার বাবার বাড়িতে চলে যান। এর কারণ জানতে গিয়ে আত্মীয়রা ওই নারীর মুখে ওই চাঞ্চল্যকর ঘটনা শোনেন।

প্রবাস থেকে তার দুই ছেলে স্বজনদের জানান, ভিডিওটি তাদের দুই ভাইয়ের কাছে পাঠিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেছেন হেনস্তাকারী চার যুবকের একজন। তাদের কিছু টাকাপয়সা দিয়ে সম্পূর্ণ ভিডিও উদ্ধার করার চেষ্টা করেছেন তারা।

পরে ৮ সেপ্টেম্বর রাতে বিষয়টি সমাধানে এক সালিশ বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে ভিডিও ধারণকারীদের চার লাখ টাকা দেওয়ার ফয়সালা করে অগ্রিম এক লাখ টাকা দেওয়া হয়। ১১ সেপ্টেম্বর বাকি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু টাকা দিতে পারেন নি তারা। পরে ১২ সেপ্টেম্বর ওই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার খবর পান তারা।

এ বিষয়ে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ফেসবুক থেকে এমন ভিডিও পেয়ে আমরা সংগ্রহ করেছি। যে চার যুবক ওই নারীকে হেনস্তা করেছে তাদের পুলিশ শনাক্ত করেছে। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখতে সোমবার রাতেই ঘটনাস্থলে যাই।

ওসি আরও বলেন, কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা যে ভিডিওগুলো সংগ্রহ করেছি, সেখানে নারীর সঙ্গে ওই যুবকদের ধস্তাধস্তি ও আপত্তিকর কিছু অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা গেছে। তবে ধর্ষণের অভিযোগও শোনা গেছে। সবকিছু তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এদিকে সামাজিক যোগেযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার

পর ফুঁসে উঠেছে জনগণ। সামাজিক যোগেযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের তীব্র জোয়ার উঠেছে। অবিলম্বে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য প্রশাসনের প্রতি তারা জোর দাবী জানিয়েছেন।

[hupso]

সর্বশেষ