সর্বশেষ

» সিলেটের ‘প্রথম স্মার্ট ক্যাম্পাস’ উদ্বোধন করলেন মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার

প্রকাশিত: ৩১. আগস্ট. ২০২০ | সোমবার

চেম্বার ডেস্ক:: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান যুগ হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তির বিকাশের যোগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদৃষ্টির কারণে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। ২০০৮ সালে বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্লোগানকে এক সময় মানুষ স্বপ্ন মনে করতো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে মুজিব শতবর্ষে বাংলাদেশ নতুনভাবে নিজেকে তুলে ধরেছে।’

 

তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারীর এই দুঃসময়ে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন যখন অনিশ্চিয়তার পথে তখন জাতি ডিজিটাল স্মার্ট ক্যাম্পাসের প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভব করেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভার্চুয়াল পাঠদান চালু হয়েছে। যা একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করেছে। এই করোনাকালীন সময়ে বাংলাদেশের মধ্যে ৪র্থ ও সিলেটের মধ্যে প্রথম স্মার্ট ক্যাম্পাস হিসেবে জালালাবাদ কলেজের যাত্রা শুধু সিলেট নয়, গোটা দেশবাসীর জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’

 

মন্ত্রী সোমবার বিকেলে সিলেটের ‘প্রথম স্মার্ট ক্যাম্পাস’ হিসেবে জালালাবাদ কলেজের যাত্রা উপলক্ষে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকমন্ডলী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার আরো বলেন, ‘বাংলাদেশকে ডিজিটাল করার উদ্যোগ শুরু করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিজ্ঞানমনস্ক গড়ে তুলতে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এ ক্ষেত্রে তাঁর দুটি উদ্যোগ ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ ও লক্ষণীয়। এর একটি হচ্ছে, আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নে (আইটিইউ) বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভ এবং অন্যটি হচ্ছে, বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন। তাঁর প্রচেষ্টায় ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আইটিইউর সদস্যপদ পায়। আইটিইউ স্যাটেলাইট অরবিট বা ফ্রিকোয়েন্সি বরাদ্দ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিধিমালা তৈরি এবং এর বরাদ্দে সহযোগিতা দেওয়া ও সমন্বয়ের কাজ করে থাকে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ উদ্বোধন করেন। বর্তমানে এই কেন্দ্রের মাধ্যমে সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, হংকং, ওমান, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই ডিজিটাল বাংলাদেশের চূড়ান্ত যাত্রা শুরু হয় ২০০৮ সালে। ইতোমধ্যে আমরা অনেকদূর এগিয়ে এসেছি। করোনার কারণে বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ভার্চুয়াল পাঠদান ইতোমধ্যে শুরু করেছে। আমাদের লক্ষ্য আগামীতে প্রতিটি ক্লাসই সম্পূর্ণ ডিজিটালভাবে অনুষ্ঠিত হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে নেটওয়ার্ক দুর্বলতা রয়েছে পাশাপাশি ডিজিটাল ডিভাইস কেনার সামর্থ্যও অনেকের নেই। সরকার এসব সমস্যা দূরীকরণে দ্রুত কাজ করছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় আমরা আগামীতে তথ্যপ্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ একটা নতুন প্রজন্ম উপহার পাবো।’

 

নগরীর সোবহানীঘাট এলাকায় জালালাবাদ কলেজ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জালালাবাদ কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল বাকী চৌধুরী।

 

উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি শহীদ-উল-মনির, কলেজ ক্যাম্পাসে উপস্থিত থেকে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল হক চৌধুরী, বক্তব্য রাখেন জালালাবাদ কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট একেএম বদরুদ্দোজা, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির আউকিউএসি’র অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক চৌধুরী মো. মোকাম্মেল ওয়াহিদ, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি সিলেটের চেয়ারম্যান এনামুল কুদ্দুস চৌধুরী ও উইজডোম ট্রাস্টের কনসালটেন্ট নাজমুল সাকিব চৌধুরী।

 

জালালাবাদের কলেজের কো-অর্ডিনেটর মুহাম্মদ আব্দুস শাকুরের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী শাহ মুহাম্মদ সুফিয়ান। সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তাওহীদ হাসান দোহা ও কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মরিয়ম বিন শাহআলম।

 

শিক্ষকদের মধ্য থেকে উপস্থিত ছিলেন সহকারী অধ্যাপক আয়েশা বেগম, সায়েম আহমদ চৌধুরী, সিনিয়র প্রভাষক সালমা আক্তার, ফাহিমা সুলতানা চৌধুরী, জান্নাতুল ফেরদৌস তৃষা, মাহমুদুল হাসান বান্না, প্রভাষক নুসরাত জাহান, তাহসিন সিদ্দিকা, ফারুক আহমদ, মিসেস সোফিয়া ফেরদৌসী, ইসরাক জাহান, নজরুল ইসলাম, ফরিদ আহমদ, সাইফুর রহমান, আলফাজ মিয়া, মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, এইচ এ মাসরুর, একেএম সাবিতুল ইসলাম সামুন, শাকিল আহমদ, মিঠুন দেবনাথ প্রমূখ।

 

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল বাকী চৌধুরী বলেন, করোনা মহামারীর কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে আমরা আরো আগেই অনলাইনে ক্লাস চালু করেছি। আজ পুরো ক্যাম্পাসকে পূর্ণাঙ্গভাবে ডিজিটালাইজড করা হলো। এর মাধ্যমে জালালাবাদ কলেজ নতুন জগতে প্রবেশ করেছে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় আমরা তথ্য প্রযুক্তির চূড়ান্ত শিখরে আরোহণ করতে চাই। একটি শক্তিশালী প্রজন্ম উপহার দিতে চাই।

 

[hupso]

সর্বশেষ