জাল টাকার নিউজ করায় কানাইঘাটে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা! প্রাণনাশের হুমকি
কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ
জাল টাকার নিউজ করায় কানাইঘাটে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধাঁ প্রদান, প্রাণনাশের হুমকি ও লাঞ্চিত সহ ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে সাংবাদিক সমাজকে তুলে ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে সুরইঘাটের সীমান্তবর্তী এলাকার চিহ্নিত চোরাকারবারি ও মাদক ইয়াবা সহ কয়েকটি মামলার আসামী তোতা মিয়া। এ ঘটনায় বাদী হয়ে কানাইঘাট প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক সাংবাদিক মুমিন রশিদ গত বুধবার রাতে কানাইঘাট থানায় স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। গত বুধবার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির বাদশা বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে বাদশা বাজারে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহতসহ কয়েকটি দোকান ভাংচুরের ঘটনার সংবাদ সংগ্রহের জন্য পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে কয়েকজন সংবাদকর্মী সেখানে যান। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে প্রকৃত ঘটনার তথ্য সংগ্রহ ও ভাংচুরকৃত দোকানের ছবি ভিডিও ধারণ করছিলেন দৈনিক বর্তমান ও স্থানীয় দৈনিক যুগভোরী পত্রিকার কানাইঘাট উপজেলা প্রতিনিধি মুমিন রশিদ। এ সময় স্থানীয় সীমান্তবর্তী সোনাতনপুঞ্জি গ্রামের মৃত ফয়জুল হকের পুত্র কুখ্যাত চোরাকারবারী তোতা মিয়া বাদশা বাজারে উপস্থিত হয়েই তার বাহিনী নিয়ে সাংবাদিক সমাজকে তুলে ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে বলে সাংবাদিকরা হচ্ছে চেটেরবাল, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে কার কি হয়? তোমরা আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে জাল নোটের সংবাদ প্রকাশ করেছ। আমি তোমাদের দেখে নিব। তোমরা সাংবাদিকরা পারলে আমার কিছু করিয়া দেখাও বলে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সংবাদকর্মীদের ছবি ও ভিডিও ধারণে বাধা প্রদান করে সে। এ সময় সাংবাদিক মুমিন রশিদের হাতে থাকা ক্যানন ডিএসএলার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় কুখ্যাত চোরাকারবারী তোতা মিয়া। সুরইঘাট এলাকায় কোন সাংবাদিক আসতে পারবে না বলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে সে। যার একটি ভিডিও রের্কডও স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে রয়েছে। তোতা মিয়া কর্তৃক পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে বাধাঁ প্রদান ও সাংবাদিকদের প্রাণনাশেঁর হুমকির বিষয়টি তাৎক্ষণিক কানাইঘাট থানার অফিসার তাজুল ইসলাম পিপিএমকে অবহিত করেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের আশ্বস্থ করে বলেন পেশাগত দায়িত্ব পালনে প্রকৃত সাংবাদিকদের বাধাঁ প্রদান ও সাংবাদিক সমাজকে হেয়প্রতিপন্ন করার অধিকার কারো নেই। কারন সাংবাদিকরা সব সময় রাষ্ট্রের পক্ষে কাজ করে থাকেন। এ ছাড়াও চোরাকারবারী ও কয়েকটি মামলার আসামী সুরইঘাট এলাকার বিভিন্ন অপকর্মের হোতা তোতা মিয়া কর্তৃক সাংবাদিকদের লাঞ্চিত সহ পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধাঁ প্রদান ক্যামেরা ছিনতাই ও সাংবাদিক সমাজ তুলে ধরে জঘন্য ভাষায় গালিগালাজের বিষয়টি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পৌর মেয়র লুৎফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম ও জেলা আওয়ামীলীগের দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতৃবৃন্দকে সাংবাদিকরা অবহিত করলে তারা বলেন তোতা মিয়া লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে। সাংবাদিকদের গালিগালাজ সহ পেশাগত দায়িত্বে সে বাধাঁ প্রদান করলে এর দায় দল নিবে না এর দায় তাকেই নিতে হবে। কারন আওয়ামীলীগ সাংবাদিকদের সব সময় সম্মান দিয়ে থাকে। স্থানীয় আওয়ামীলীগের তৃর্ণমূল পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন ২০১৪ সালে হঠাৎ করে আওয়ামীলীগে আবির্ভাব ঘটে তোতা মিয়ার। সে ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে সুরইঘাট এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চোরাচালান সহ বিভিন্ন ধরণের অপকর্ম চালিয়ে এলাকায় সরকার ও আওয়ামীলীগের ভাবমূর্তি মারাত্মক ভাবে ক্ষুন্ন করছে তোতা মিয়া। এদিকে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় সাংবাদিকরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন। তা না হলে স্থানীয় সাংবাদিকরা যে কোন ধরণের কর্মসূচী গ্রহণ করতে বাধ্য হবে। সেই সাথে এলাকার আলোচিত সমালোচিত সাংবাদিক সমাজকে গালিগালাজকারী ও প্রাণনাশের হুমকী দাতা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নকারী তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানানো হয়। প্রসঙ্গ যে, সম্প্রতি তোতা মিয়ার ভাই আফতাব উদ্দিন জাল টাকা সহ পূবালী ব্যাংক কানাইঘাট শাখায় থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। তার এ সংবাদ স্থানীয় সাংবাদিকরা গণমাধ্যমে প্রকাশ করলে মুলত তোতা মিয়া সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিতে থাকে। এরই জেরে মূলত তোতা মিয়া তার বাড়ির পাশের বাদশা বাজারে সাংবাদিকদের উপর পরিকল্পিত ভাবে হামলা করার চেষ্টা করেছে বলে প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন। বর্তমানেও তার হুমকিগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে অব্যাহত রয়েছে।