লোভাছড়ার পাথর পরিবহন বন্ধের পর বাড়ানো হয়েছে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি

কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ সিলেটের কানাইঘাট লোভাছড়া পাথর কোয়ারীর সব ধরণের কার্যক্রম ও পাথর পরিবহন বন্ধ করার পর কোয়ারী এলাকায় প্রশাসনের কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার এক চিঠির মাধ্যমে কোয়ারীর ৪৫ লক্ষ ঘনফুট পাথরের নিলামকৃত ইজারাদার পিয়াস এন্টারপ্রাইজকে পাথর পরিবহন বন্ধ করতে বলেন। এরপর ১৯ আগস্ট খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো বিএমডি’র সহকারী পরিচালক এজাজুল ইসলাম লোভাছড়া পাথর কোয়ারী পরিদর্শন করে পরবর্তী উচ্চ আদালতের নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত পিয়াস এন্টারপ্রাইজকে পাথর পরিবহন বন্ধ করার নির্দেশ দেন। সেই সাথে তিনি কোয়ারীতে সবধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানান।
১৯ আগস্ট কোয়ারীর পাথর পরিবহন, অপসারন এবং অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর কোয়ারী এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ১৯ আগস্ট কয়েকটি পাথর বোঝাই বলগেট কোয়ারী এলাকা থেকে ছেড়ে নদীপথে যাওয়ার চেষ্টা করলে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার সেখানে উপজেলা ভ‚মি অফিস ও স্থানীয় তহশীল অফিসের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাঠান এবং পাথর অপসারন করান। কোয়ারী এলাকায় মজুদকৃত রাখা পাথর কেউ অপসারন বা পরিবহন করতে না পারে এজন্য সার্বক্ষণিক ভ‚মি অফিসের লোকজনদের অবস্থানের নির্দেশ দেন। কোয়ারী এলাকায় মজুদকৃত রাখা পাথর দেখভাল সহ পাথর পরিবহন ও অপসারন এবং সেই সাথে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো কর্তৃপক্ষ কানাইঘাট থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেয়ার পর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়ালের নেতৃত্বে পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম গত ১৯ আগস্ট থেকে লোভাছড়া পাথর কোয়ারী সহ আশপাশ এলাকায় সার্বক্ষণিক অবস্থান করতে দেখা গেছে। যার কারনে পাথর পরিবহনে বাঁধা নিষেধ করার পর কোয়ারী এলাকা থেকে মজুদকৃত রাখা পাথর নদীপথে পরিবহন ও পাচার বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি লোভাছড়া বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা কোয়ারী এলাকায় টহল জোরদার করেছেন। আগের চাইতে বিজিবির সদস্য সংখ্যা সেখানে বাড়ানো হয়েছে, যাতে করে কোয়ারী থেকে কেউ পাথর অপসারন বা পাথর উত্তোলন করতে না পারে।
লোভাছড়া কোয়ারীর সার্বিক বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার বলেন, কোয়ারী এলাকায় সব-সময় প্রশাসনের নজরদারি ছিল এবং বিভিন্ন সময়ে টাস্কফোর্সের অভিযান সেখানে চালানো হয় এবং তা অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, ২৩ জুলাই নিলামকৃত পাথরে লীজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি পিয়াস এন্টারপ্রাইজকে পাথর পরিবহন বন্ধ করার নির্দেশ দেন এবং কোয়ারীর সার্বিক বিষয় তুলে ধরে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো বিএমডি ও সিলেটের জেলা প্রশাসক সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিক চিঠিও দেন। ১৮ আগস্ট খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো বিএমডি লোভাছড়া কোয়ারী থেকে পিয়াস এন্টারপ্রাইজকে পাথর পরিবহন বন্ধ করা সহ কোয়ারীর যাবতীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর উপজেলা প্রশাসন, বিজিবি, থানা পুলিশ কোয়ারী এলাকায় সব-ধরনের বেআইনী কর্মকান্ড বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ঐদিন কয়েকটি পাথর বোঝাই নৌকা কোয়ারী থেকে নদীপথে যাওয়ার চেষ্টা করলে সেগুলো আটক করে কোয়ারীতে পাথর আনলোড করা হয়। কোয়ারী এলাকায় প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে আজ শুক্রবার থেকে একজন ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন। স্ইে সাথে কেউ পাথর পরিবহন ও অপসারন এবং অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক নেয়া হবে বলে জানান।
থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল বলেন, ১৮ আগস্ট লোভাছড়া কোয়ারী থেকে পাথর পরিবহন সহ সবধরনের কার্যক্রম বন্ধ করার পর খনি উন্নয়ন ব্যুরো বিএমডি’র নির্দেশনা অনুযায়ী কোয়ারী এলাকায় পুলিশের একাধিক টিম সার্বক্ষণিক ভাবে মজদুকতৃ পাথরের দেখভাল সহ যাতে করে কেউ পাথর পরিবহন করতে না পারে এজন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।