কানাইঘাটে হাসপাতাল আছে, ডাক্তার নেই চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত তিন লক্ষ মানুষ

কানাইঘাট প্রতিনিধি: সিলেটের সীমান্তবর্তী কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এতে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার প্রায় তিন লক্ষ মানুষ। মাত্র একজন চিকিৎসক দিয়ে কোনোভাবে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ ১৬টি পদের মধ্যে ১ জন চিকিৎসক রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছাড়া ১৪ টি চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকায় উপজেলায় তিন লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করতে হচ্ছে এই একজন চিকিৎসককে দিয়ে। কিন্তু কোনোভাবেই তারা সামাল দিতে পারছেন না রোগীর চাপ। ফলে ভেঙে পড়েছে এ উপজেলার স্বাস্থ্য সেবা।

কানাইঘাট উপজেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সদরে ৫০ শয্যায় হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ মোট ১৬ জন ডাক্তারের পদ রয়েছে। এর মধ্যে ১ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ১ জন আরএমও ৪ জন কনসালটেন্ট, ২ জন মেডিকেল অফিসার, ১ জন ডেন্টাল, ৭ জন ইউনিয়ন সহকারী সার্জন মেডিকেল অফিসার থাকার কথা।

এদিকে ১৬ জন চিকিৎসকের মধ্যে ১ জন মেডিকেল অফিসার ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রয়েছেন। বাকি ১৪ টি চিকিৎসকের পদ দীর্ঘ দিন থেকে শূন্য থাকায় ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। চিকিৎসক না থাকার ফলে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার মানুষ।

এ ছাড়া হাসপাতালে ওয়ার্ড বয় ৩ জন থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ১ জন, পরিচন্নকর্মী ৫ জন, অফিস সহায়ক পদে ৪ জন, আয়া ২ জন, বাবুর্চি ২জন, নিরাপত্তাপ্রহরী ২জন, মোট ১৯ জনের মধ্যে হাসপাতালে নেই কেউ।

গত বুধবার হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, বহির্বিভাগের অধিকাংশ চিকিৎসকের রুম তালাবদ্ধ। অনেক রোগী চিকিৎসা সেবা না পেয়ে হাসপাতাল থেকে ফেরত যাচ্ছেন। চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারী না থাকায় ডায়বেটিস পেশারের ঔষধ নিতে আসা বৃদ্ধ পুরুষ/মহিলাসহ রোগীদের দির্ঘক্ষণ লম্বা লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেক সময় রোগীরা লাইনে দাড়িয়ে দিন শেষে ঔষধ না পেয়ে খালি হাতে ফেরত যাওয়ার গুঞ্জন রয়েছে। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায় কানাইঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার, নার্স ও পর্যাপ্ত ঔষধ না থাকায় সকাল থেকে আসা শত শত লোক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে কানাইঘাট সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসক দেওয়ার আহ্বান জানান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সুবল চন্দ ভর্মন এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, কানাইঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাগজে কলমে ২ জন আবাসিক মেডিকেল অফিসার থাকলেও ১ জন সিলেট উসমানী হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। বেতন ভাতা নিচ্ছেন কানাইঘাট হাসপাতাল থেকে অপর জন মহিলা ডাক্তার হওয়ায় আগামী সপ্তাহেই তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটিতে চলে যাবেন। তিনি ছুটিতে চলে গেলে কানাইঘাট হাসপাতালে কোন ডাক্তার নেই। উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি । দ্রত সময়ের মধ্যে হাসপাতালে ডাক্তার না দিলে চিকিৎসা সেবা একেবারেই বন্ধ হওয়ার পথে রয়েছে।