মৌলভীবাজারে জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে ভূমি দখলের অভিযোগ

বিশেষ প্রতিবেদক: ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর থেকে দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় মৌলভীবাজার জেলায়ও ব্যাপক প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে জামায়াতে ইসলামীর। দলটির নেতাকর্মীদের প্রভাব এবং বেপরোয়া রাজনৈতিক কার্যক্রমে অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের মাঝে কিছুটা আতংক বিরাজ করছে। বিশেষ করে ছোট ছোট বিভিন্ন ইসলামী দল ও মতের লোকদের দ্বারা পরিচালিত স্কুল-মাদরাসার জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে দলটির কিছু নেতার বিরুদ্ধে।

স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা যায়,জামায়াতের বর্তমান আমীর ডা:শফিকুর রহমানের গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলায়। এ কারণে আওয়ামীলীগ
সরকারের পতনের পর থেকেই এ অঞ্চলের জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন।কয়েকজন নেতা পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে প্রশাসনের সর্বত্র প্রভাব বিস্তার করছেন।

এই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে ভিন্ন দল ও মতের লোকদের পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দখল এবং মামলা বাণিজ্যের চেষ্ঠা করছেন স্থানীয় জামায়াত নেতা মো:আসাদ।

তিনি ‘মিরপুর হুসাইনিয়া একাডেমি’ নামে একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন এ জামায়াত নেতা। তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভূমি দখলের অভিযোগ উঠেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়,তার পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ ছিল ‘দারুল ফালাহ একাডেমি’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে সে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইব্রাহীম আল হুসাইনী নিহত হয়েছিলেন। সে ঘটনার পর থেকে নিহত ইব্রাহিমের ভাই খলিলুর রহমান ও হাফিজুর রহমান পলাতক। এবং শিক্ষা ভবনটি ছিল পরিত্যক্ত অবস্থায়।

২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর নানা উপায়ে এই ভবনের জায়গাটি দখলে নেওয়ার পায়তারা শুরু করেন মো:আসাদ। নানা প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এপ্রিলের ১ম সপ্তাহ থেকে এই জায়গায় নিজের নামে সাইনবোর্ড টানিয়েছেন তিনি। এবং একটি আধুনিক মাদরাসা প্রতিষ্ঠার জন্য স্থানটি বরাদ্দ বলে সাইনবোর্ডে লিখে রেখেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ,হামলা মামলার ভয় দেখিয়ে এভাবে অনেক মানুষের জায়গা দখল করছেন এই জামায়াত নেতা। অনেক হিন্দু পরিবারের সদস্যরাও এ জামায়াত নেতার দ্বারা হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। মামলার ভয়ে নাম প্রকাশ করে কেউ প্রভাবশালী এ জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারছেন না।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে জামায়াত নেতা মো:আসাদ বলেন,এগুলো অপপ্রচার। আওয়ামীলীগ সরকারের সময় যারা সুবিধাভোগী ছিল-তারা এসব প্রচার চালাচ্ছে। আমি কারো ভূমি দখল করছি না। অনেকে আমার দলের লোকদের জমি দখল করেছিল,আমি সেগুলো উদ্ধার করছি।’