সর্বশেষ

» নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন কানাইঘাটে নিহত প্রবাসী মাও. হামিদের পরিবারের লোকজন

প্রকাশিত: ১৮. অক্টোবর. ২০২০ | রবিবার

||  থানায় পৃথক জিডি ||

কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ সিলেটের কানাইঘাটের মাওলানা আব্দুল হামিদ হত্যা মামলার অনেক আসামী ও স্বজনদের ভয়ভীতি  হুমকির মুখে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন নিহতের পরিবারের লোকজন। হত্যা মামলার বাদী আব্দুর রকিব জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে হত্যা কানাইঘাট থানায় পৃথক দুইটি সাধারণ ডায়রী করেছেন।

সরেজমিনে জানা যায়, গত ১৯ জানুয়ারী পূর্ব বিরোধের জের ধরে উপজেলা বড়বন্দ ২য় খন্ড গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের পুত্র সৌদিআরব প্রবাসী মাওলানা আব্দুল হামিদকে তাদের পারিবারিক মসজিদ থেকে জোহরের নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে একই গ্রামের প্রতিপক্ষের লোকজন অতর্কিত ভাবে দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। সিলেট এমএজি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার ১১দিন পর মারা যান সৌদি প্রবাসী ৫ সন্তানের জনক মাওলানা আব্দুল হামিদ। এ ঘটনায় হামিদের ভাই আব্দুর রকিব বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় একই গ্রামের মৃত আব্দুল হকের পুত্র মুহিব, তার ছেলে আলিম উদ্দিন ও তাদের স্বজন রুহুল আমিন, শামীম, রকিব, শাহীন সহ ১৬জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামীরা গত ৭ সেপ্টেম্বর সিলেট কানাইঘাট আমল গ্রহণকারী আদালতে উপস্থিত হলে বিজ্ঞ আদালত আসামীদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। আসামীদের জেল হাজতে প্রেরণ করার পর থেকে তাদের স্বজনরা মামলার বাদী আব্দুর রকিবকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য নানাভাবে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে বলে তিনি জানান।

নিহতের পরিবার ও এলাকার লোকজন জানান, গত ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টার দিকে মামলার বাদী আব্দুর রকিবকে তার বাড়ির পাশে পেয়ে হত্যা মামলার কয়েকজন আসামীর স্বজনরা তাকে আদালত থেকে মামলা তুলে না আনলে ভারতীয় ফেনসিডিল, মদ-গাঁজা, ইয়াবা, অবৈধ অস্ত্র দিয়ে মামলায় জড়ানো সহ তাকে প্রাণে হত্যা করবে বলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। এতে জীবনের নিরাত্তা চেয়ে হত্যা মামলায় আসামীদের ৯জন আত্মীয় স্বজনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে গত ১৯ সেপ্টেম্বর আব্দুর রকিব বাদী হয়ে থানায় সাধারণ ডায়রী করেন, থানার জিডি নং- ১০০৭, তারিখ- ১৯/০৯/২০২০ইং। এছাড়াও পূর্বে ০৯/০২/২০২০ইং তারিখে পৃথক আরো একটি সাধারণ ডায়রী করেছিলেন আব্দুর রকিব।

হত্যা মামলার বাদী নিহত আব্দুল হামিদের বড় ভাই আব্দুর রকিব কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, তার প্রবাসী ভাইকে অত্যন্ত নিষ্ঠুর কায়দায় আসামীরা হত্যা করেছে। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামী ও তাদের স্বজনরা অব্যাহত ভাবে তাকে মামলা তুলে আনার জন্য নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন, প্রাণ নাশের হুমকি, এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করবে বলে হুমকি দিয়ে আসছে। যার কারনে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন তিনি স্বাভাবিক ভাবে পরিবারের লোকজন চলাফেরা করতে পারছে না।

গ্রামের তবারক আলী আব্দুর রশিদ, আব্দুল মতিন, ফরিদ উদ্দিন, আলমগীর, আফতাব, আব্দুল্লাহ, আশুতোষ চৌধুরী সহ আরো অনেকে জানিয়েছেন, প্রবাসী মাও. আব্দুল হামিদকে সাপের মতো পিঠিয়ে আসামীরা হত্যা করেছে। হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানান তারা।

নিহতের স্ত্রী সালেহা বেগম অজোরে চোখের পানি ফেলে বলেন, তার স্বামী কোন অপরাধ করেননি, অথচ তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে অবুঝ ৪ মেয়ে ও ১ ছেলেকে নিয়ে অসহায় ভাবে জীবন যাপন করছেন। তার ছেলেকে স্কুলে যেতে রাস্তা-ঘাটে আসামীরা হুমকি দিচ্ছে। স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবী জানান তিনি।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার সেকেন্ড অফিসার এস.আই হুমায়ুন কবিরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আব্দুল হামিদ হত্যা মামলাটি তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট প্রদান করা হবে এবং তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সব-সময় খোঁজখবর নিচ্ছে এবং আমরা সে আলোকে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

[hupso]

সর্বশেষ