সর্বশেষ

» মসজিদে বিস্ফোরণে সব বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬. সেপ্টেম্বর. ২০২০ | রবিবার

চেম্বার ডেস্ক:: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্যাস লাইনের উপর মসজিদ নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছিল কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও অন্য সব বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। অধিবেশনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।

 

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাম জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, বিদ্যুৎ বিভাগ ও গ্যাস কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জের মসজিদে বিস্ফোরণের যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। ইতোমধ্যে সেখানে বিস্ফোরক তদন্ত দল গেছে, তদন্ত হচ্ছে। কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে তার তদন্ত হবে। মৃতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। যারা আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জের মসজিদে যে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি সেখানে গেছে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা সেখানে গেছে নমুনা সংগ্রহ করছে। এই ঘটনা কেন ঘটল, কীভাবে ঘটেছে- সে ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে। সেটি অবশ্যই বের হবে। আমি কারণ খুঁজে বের করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, বিদ্যুৎ বিভাগ ও গ্যাস কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছি।

সংসদ নেতা বলেন, যখনই এধরনের ঘটনা ঘটে, সাথে সাথে আমাদের বার্ন ইনস্টিটিউটের ডা. সামন্ত লাল মেসেজ পাঠিয়েছেন। সার্বক্ষণিক মেসেজ পাঠাচ্ছেন এবং রোগীর অবস্থা জানাচ্ছেন। অনেকেই মারা গেছেন, বাকি যারা বেশিরভাগই তাদের পোড়া অবস্থা এত খারাপ তার পরও চিকিৎসার সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এটি খুবই দুঃখজনক যে নামাজ পড়া অবস্থায় মসজিদে বিস্ফোরণ হলো।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ওইটুক জায়গায় ছয়টা এসি লাগানো। আবার খবর পাচ্ছি সেখানে গ্যাস লাইনের ওপরেই নাকি মসজিদটি নির্মিত। সাধারণত যেখানে গ্যাসের পাইপ লাইন থাকে সেখানে নির্মাণ কাজ হয় না। জানি না রাজউক অনুমতি দিয়েছে কিনা, এখানে অনুমতি তো দিতে পারে না। দেওয়া উচিত নয়। কেননা, এটি সব সময় আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকবে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন মসজিদে সবাই দান করে। কেউ এসি দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিদ্যুৎ সরবরাহ কতটা নিতে পারবে, সেই ক্যাপাসিটি ছিল কিনা- বিষয়গুলো দেখতে হবে। অপরিকল্পিতভাবে কিছু করতে গেলে তার একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমি মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে বলেছি বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সংশ্লিষ্টদের প্রত্যেককে নির্দেশ দিয়েছি এর কারণ খুঁজে বের করার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশের মসজিদগুলোতে অপরিকল্পতিভাবে এসি লাগাচ্ছেন বা যেখানে সেখানে মসজিদ গড়ে তুলছেন, আদৌ তা মসজিদ করবার জায়গা কিনা বা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেওয়া বা সেখানে নকশা করা হয়েছে কিনা সেগুলো দেখা একান্ত প্রয়োজন। দুর্ঘটনা সত্যি খুব দুঃখজনক। যাঁরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁদের আত্মার  মাগফিরাত কামনা করি, আর আহতদের দ্রুত আরোগ্য লাভ কামনা করি।

জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আনীত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের সাহসী ভূমিকার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা ছিল অস্বাভাবিক ঘটনা। আগের আমরা সেখানে গেলাম ভালো পরিবেশ ছিল। পরদিন এ ধরনের একটা বিদ্রোহের ঘটনা ঘটল।’

তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘এর পেছনে কারা আছে? আমরা তো মাত্র সরকার গঠন করেছি। এটা কোনো দিনই যুক্তিযুক্ত না সরকার গঠন করে আমরা এমন একটা ঘটনা ঘটাবো যাতে দেশে অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা ক্ষমতায় আসতে পারেনি তারাই তাদের (বিদ্রোহীদের) পেছনে ছিল। যারা ওয়ান-ইলেভেন সৃষ্টি করেছিল, তাদের ধারণা ছিল একটা হাং (একক সংখ্যাগরিষ্ঠতাহীন) পার্লামেন্ট হবে। কিন্তু যখন দেখল আওয়ামী লীগ মেজরিটি নিয়ে ক্ষমতায় আসল, তখন সবকিছু যাদের নস্যাৎ করার অপচেষ্টা ছিল, তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’

তিনি বলেন, ‘একদিন না একদিন সত্যটা বের হবে। বিএনপি-জামায়াতের ভালো একটা মিথ্যা বলার আর্ট আছে। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে তার দলের লোকজন বলে ফেলল- আমি নিজেই গ্রেনেড নিয়ে নিজেই গ্রেনেড মেরেছি। তখন এটার ব্যাপক প্রচার করে ফেলল।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঠিক বিডিআরের ঘটনাটি যখন ঘটল, তখন তারা ওইভাবে প্রচার শুরু করল। কিন্তু কেউ এটার কোনো যুক্তি খুঁজে পাবে না।’

তিনি বলেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন। সাধারণ কারও পক্ষে এটা সম্ভব ছিল না। তিনি নিজের জীবন বাজি রেখে সেনা অফিসারদের পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করে এনেছিলেন।

গত ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস সদর দপ্তরে (বিডিআর) বাহিনীটির কিছু বিপথগামী সদস্য বিদ্রোহ করেন। ওই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৭৪ জন যাদের প্রায় সবাই সেনা কর্মকর্তা।

[hupso]

সর্বশেষ